শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় আর নেই

৩৯

অজানার উদ্দেশে ডিঙা ভাসিয়ে দিলেন গীতিকার, সুরকার ও সংগীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। শনিবার সকালে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।

- Advertisement -

- Advertisement -

বার্ধক্যজনিত কারণে এক মাসের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। গত সপ্তাহ থেকে ছিলেন আইসিইউতে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে।

গত জানুয়ারিতে এসএসকেএমে ভর্তি করানোর সময় তার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাই স্নায়ু ও নাক-কান-গলার বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা হয় তার। ফেব্রুয়ারির শুরুতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, হার্ট অ্যাটাক হয়েছে গায়কের। দ্রুত তাকে কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে শিল্পীর ফুসফুসেও সংক্রমণ দেখা দেয়। দ্রুতই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।

প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৪২ সালে বাংলাদেশের বরিশালে। তার বাবা ছিলেন স্কুলশিক্ষক। ৪৭ এর দেশভাগের পর বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রতুল চলে যান ওপার বাংলায়।

স্কুলের মঞ্চেই অভিনয় দক্ষতা দেখিয়েছিলেন তিনি। ‘গায়ক অভিনেতা’ হিসেবে একটি স্কুলের নাটকের মঞ্চে আত্মপ্রকাশ করেন প্রতুল।

বিভিন্ন কবির কবিতায় সুর দিলেও তিনি নিজে গান লিখতে শুরু করেন ১৯৬২ সালে। তারপর এক দশক ধরে বেশ কিছু সংখ্যক গণসংগীত রচনা করেছেন।

এক সময়ের নকশাল আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী প্রতুল। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন কলেজের শিক্ষকতা, ইউনাইটেড ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার স্ট্যাটিসটিকস অ্যান্ড লং রেঞ্জ প্ল্যানিং বিভাগের প্রধান ব‌্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেছে তিনি।

বাংলা আধুনিক গান থেকে জাপানি গান, আবার হিন্দি ছবির গান থেকেও উপাদান সংগ্রহ করেছেন। সৃষ্টি করেছেন একের পর এক গান। জীবনের প্রথম অ্যালবাম ‘পাথরে পাথরে নাচে আগুন’ (১৯৮৮)।

তবে সেটি একক অ্যালবাম নয়। অন্য শিল্পীদের সঙ্গে মিলে কাজ করতে হয়েছিল।

এরপর ১৯৯৪ সালে ‘যেতে হবে’ প্রতুলের প্রথম একক অ্যালবাম। শেষ অ্যালবাম ‘ভোর’ (২০২২)।

তার জনপ্রিয় গানের মধ্যে ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘আলু বেচো’, ‘ছোকরা চাঁদ’, ‘তোমার কি কোনো তুলনা হয়’, ‘সেই মেয়েটি’, ‘ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ’ দুজনাই বাঙালি ছিলাম-এর মতো গানও শ্রোতার মন জিতেছে বারবার।