সৌদি আরবের আরাফাতের প্রান্তরে সমবেত হয়েছেন বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে হজ করতে আসা লাখো মুসলমান।
বৃহস্পতিবার সকালে তাঁবু নগরী মিনা থেকে আরাফাতের প্রান্তর অভিমুখে রওনা হন হাজিরা। তাদের ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে আরাফাতের প্রান্তর। এই আরাফাতের দিনই হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
আরাফাতের প্রান্তরে সূর্যাস্ত পর্যন্ত থাকবেন হাজিরা। মসজিদে নামিরা থেকে দেওয়া হবে হজের খুতবা। এ বছর খুতবা দেবেন মসজিদুল হারামের খতিব শায়খ সালেহ বিন আবদুল্লাহ বিন হুমাইদ। খুতবাটি ২০টিরও বেশি ভাষায় সম্প্রচার করা হবে, যার মধ্যে বাংলাও রয়েছে।
এই দিন জোহর ও আসরের নামাজ একসঙ্গে সংক্ষিপ্তভাবে আদায় করেন হাজিরা।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আরাফাতের ময়দানে বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে। তাই নিয়মিত আবহাওয়ার খোঁজ রাখার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত গরম ও সানস্ট্রোক থেকে রক্ষায় নির্দিষ্ট পরিবহনে চলাচলের পরামর্শ দিয়েছে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়।
আরাফাতের দিন সূর্যোদয় থেকে জোহরের আগে পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করা ফরজ। এরপর মাগরিবের নামাজ না পড়ে হাজিরা রওনা হন মুজদালিফার উদ্দেশে। সেখানে একসঙ্গে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করে খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করেন।
মুজদালিফায় অবস্থানের সময়ই হাজিরা শয়তানকে মারার জন্য পাথরের নুড়ি সংগ্রহ করেন।
পরদিন ১০ জিলহজ সকালে মিনায় ফিরে জামরাতে (শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ) অংশ নেন হাজিরা। তিনটি জামরাতেই সাতটি করে কঙ্কর ছুড়তে হয়।
বড় জামরাতে কঙ্কর নিক্ষেপের পর কোরবানির মাধ্যমে শুরু হয় ঈদুল আজহার আনুষ্ঠানিকতা।
কোরবানি শেষে মাথা মুণ্ডন করে ইহরাম খোলা হয়। এরপর সাধারণ পোশাক পরে হাজিরা কাবা শরিফ তাওয়াফ করেন, নামাজ আদায় করে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে সাতবার সাঈ করেন। এ সময় জমজমের পানি পান করতে বলা হয়।
১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে প্রতিদিন ২১টি করে কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হয় তিনটি জামরাতে। কেউ যদি কাবা শরিফে গিয়ে তাওয়াফ করেন, তাহলে তাকে আবার মিনায় ফিরে রাত কাটাতে হয়।
নারী, প্রবীণ ও অসুস্থ হাজিদের জন্য রাতের বেলায় কঙ্কর নিক্ষেপের অনুমতি রয়েছে। এখন হাজিদের সময়সূচি অনুযায়ী জামরাতে যেতে হয়, যাতে ভিড় এড়ানো যায়। নির্দেশনাগুলো বাংলায়ও দেওয়া হচ্ছে।
মিনায় ১০ থেকে ১২ জিলহজ রাত্রিযাপন ফরজ। কেউ যদি ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগেই মিনাত্যাগ করেন, তাহলে ১৩ তারিখ মিনায় থাকতে হয় না। তবে সূর্যাস্তের পরও থাকলে ১৩ তারিখ আরও ২১টি কঙ্কর ছুড়তে হয়।
মক্কা ছাড়ার আগে হাজিদের করতে হয় বিদায়ী তাওয়াফ। ১২ জিলহজের পর যে কোনো নফল তাওয়াফ বিদায়ী তাওয়াফ হিসেবে গৃহীত হয়।
বাংলাদেশিদের ফিরতি হজ ফ্লাইট শুরু হবে ১০ জুন থেকে, শেষ হবে ১০ জুলাইয়ের মধ্যে।