হাসিনার বিচার না করলে জনগণ ক্ষমা করবে না: প্রধান উপদেষ্টা

২৩

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

- Advertisement -

- Advertisement -

সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা ‘দ্য ন্যাশনাল’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই কথা বলেছেন। দুবাইয়ের ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটের (ডব্লিউজিএস) এক ফাঁকে অধ্যাপক ইউনূস এই সাক্ষাৎকার দেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আমরা তাকে (হাসিনা) বিচারের আওতায় আনব। এটি অবশ্যই করা হবে, অন্যথায় জনগণ আমাদের ক্ষমা করবে না।’

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের মুখোমুখি করার কথা বলেছেন বলে বার্তা সংস্থা বাসসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলনে পুলিশ ও শেখ হাসিনার দলের লোকজন প্রায় ১,৪০০ জনকে হত্যা করে। এ আন্দোলনে আহত হন ১১ হাজার।

ড. ইউনূস ‘দ্য ন্যাশনাল’ পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছি, শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করতে হবে।’

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টসহ শেখ হাসিনার অপরাধের বিপুল পরিমাণ প্রমাণ রয়েছে উল্লেখ করেন তিনি।

ড. ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছি এবং আশা করছি এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। এটি অবশ্যই করা হবে, অন্যথায় জনগণ আমাদের ক্ষমা করবে না।’

জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়ে সাজা পাওয়া আমিরাত প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রসঙ্গে ‘দ্য ন্যাশনাল’কে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমিরাতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। যখন আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হলাম, তখন আমিরাতের প্রেসিডেন্টের কাছে আবেদন করি। আমি তাকে ব্যাখ্যা করি যে, তারা শুধু বাংলাদেশে চলমান আন্দোলনের প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছিল।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষমা করায় আমি অত্যন্ত খুশি হই। এটি একটি অসাধারণ পদক্ষেপ ছিল এবং পুরো বাংলাদেশ সেটি উদযাপন করেছে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা দ্রুত পুনরুদ্ধার এবং অর্থনীতিকে সচল করা।’

রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের সাথে সংস্কার নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেছেন, ‘এটাই আমাদের সরকারের কাজের সীমা। এরপর আমরা ১৬ বছর পর প্রথমবারের মতো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজন করব। জনগণ এটিকে উদযাপন করবে এবং আমাদের কাজ শেষ হবে।’

দুবাইয়ে ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আমাদের ঐকমত্য কমিশন একটি জাতীয় রূপরেখা প্রস্তুত করছে। বলা যায় আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এগুচ্ছে।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘আমার কাজ শেষ হলে, আমি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করব।’