রবিবার নগরজুড়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের তাণ্ডবে ভয়াবহ যাত্রী দুর্ভোগ তৈরির জন্য বিআরটিএকে দায়ী করে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করেছে যাত্রীকল্যাণ সমিতি।
সোমবার সকালে নগরীর ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি করেন।
জনগণের অর্থে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানটি অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারী সিএনজিচালিত অটোরিকশার বিরুদ্ধে মামলা রুজুর প্রজ্ঞাপন বাতিল করে অসহায় যাত্রীদের ভাড়া নৈরাজ্যকারী অটোরিকশা চালকদের হাতে তুলে দেওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি বিলুপ্তির দাবিও করেন তিনি।
ফিটনেসবিহীন পুরোনো লক্কড়-ঝক্কর বাসগুলো রাতারাতি গোলাপি রং করে চালানোয় নগরজুড়ে প্রতিদিন গণপরিবহন সংকটে ভয়াবহ যাত্রী দুর্ভোগ তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ যাত্রী কল্যাণ সমিতির।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, রাজধানী ঢাকার গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে গত ১৯ ডিসেম্বর সরকারের চার উপদেষ্টা, পুলিশ ও বিআরটিএসহ বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় স্টেকহোল্ডারদের সভায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ঢাকা মহানগরীর ২০ বছরের পুরোনো বাস মে মাসের মধ্যে উচ্ছেদ করার নির্দেশনা দেন। একই সঙ্গে ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকার সবরুট বিলুপ্ত করে ৯টি রুটে ৯ রঙের উন্নত বাস পরিসেবা চালুর নির্দেশনা দেন। এ নির্দেশনার অপব্যবহার করে ২০-৪০ বছরের ফিটনেসবিহীন বাসে গোলাপি করে চালানো হচ্ছে।
একদিকে ভাড়ার শর্ত লঙ্ঘন, অন্যদিকে অব্যবস্থাপনায় গণপরিবহন সংকটে ভয়াবহ যাত্রী দুর্ভোগ তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগে সংগঠনটির।
মোজাম্মেল হক বলেন, এমন সংকট নিরসনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ, ট্রাফিক বিভাগ ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কোনো হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি। সংকট নিরসনে যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করা হলে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, নগরীতে যেকোনো গণপরিবহন পরিসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ঢাকামেট্রো আরটিসির অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও এক্ষেত্রে তা অনুসরণ করেনি। রং পরিবর্তন করা ২৬১০টি বাসের তালিকা বিআরটিএ বা ট্রাফিক বিভাগ কারো কাছে পাওয়া যায়নি।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এসব বাস-মিনিবাসের সিংহভাগই ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কর, অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নোংরা আর্বজনায় ভরপুর। কোনো কোনো বাসের পেছনে লাইট-ইন্ডিকেটর আর লুকিং গ্লাস নেই। আসনে দুই পা মেলে বসা যায় না। কোনো কোনো বাসের পাদানি, ধরার হ্যান্ডেল ভাঙা এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বালাই নেই। উপরন্তু কোনো কোনো পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
এসব বাস উচ্ছেদ করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে মালিক সমিতির পরিবর্তে একটি কোম্পানির আদলে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে রুট রেশনলাইজেশন পদ্ধতিতে কোরিডর ভিত্তিক চলাচল নিশ্চিত করে ৫,০০০ উন্নতমানের বাস নামানোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক, যুগ্ম মহাসচিব মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্য মোঃ জিয়াউল হক চৌধুরী, সদস্য মোহাম্মদ আরিফ হোসেন প্রমুখ।