প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে ঐক্য রক্ষার অটল প্রত্যয় প্রধান উপদেষ্টার

46

সবাইকে সাথে নিয়ে সব বাধা অতিক্রম করে ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

- Advertisement -

- Advertisement -

সোমবার জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাতে অংশ নেওয়ার পর শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদুল ফিতরের প্রধান ঈদ জামাতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়াও ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, সচিবসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

ঈদের নামাজের পর প্রধান উপদেষ্টা শুভেচ্ছা বক্তব্যের শুরুতে বলেন, “আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি বাজারে, প্রতিটি গঞ্জে, প্রতিটি শহরে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমরা জাতির পক্ষ থেকে জামাতে যারা যেখানে শরিক হয়েছেন, তাদেরকে ঈদ মোবারক জানাচ্ছি। যারা ঈদের জামাতে শরিক হবার সুযোগ পাননি, তাদেরকেও আমরা ঈদ মোবারক জানাচ্ছি।”

“আমাদের মা-বোনেরা, মহিলারা যারা ঘরে আছেন, তাদেরকেও আমরা জাতির পক্ষ থেকে ঈদ মোবারক জানাচ্ছি

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমাদর প্রবাসী শ্রমিকরা, যারা বিদেশে আছেন, সারা বছর কষ্ট করেছেন। আজকে হয়ত ঈদের জামাতে যেতে পারবেন, কিম্বা যেতে পারবেন না, কিন্তু জাতির পক্ষ থেকে আমরা তাদেরকেও ঈদ মোবারক জানাচ্ছি। যারা বাংলাদেশিরা আছেন, বিভিন্ন দেশে, জাতির পক্ষ থেকে তাদেরকেও আমরা ভুলে যাইনি, তাদেরকেও আমরা ঈদ মোবারক জানাচ্ছি। যারা হাসপাতালে আছেন, রোগী, বিভিন্ন কারণে ঈদের জামাতে যেতে পারেননি, তাদেরকেও ঈদ মোবারক জানালাম।”

ঈদের দিনের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ঈদ দূরত্ব ঘোচাবার দিন, নৈকট্যের দিন, ভালোবাসার দিন। আজকে সেই দিনটা আমরা যেন গভীর ভালোবাসার সঙ্গে উদযাপন করতে পারি, সেই মেসেজ যেন সবার কাছে পৌঁছে দিতে পারি।”

তিনি বলেন, “আজকে একটা ঐক্য গড়ে তোলার দিন। আমরা স্থায়ীভাবে এই ঐক্য গড়ে তুলতে চাই, ঈদের জামাতে এটাই আমাদের কামনা।”

প্রধান উপদেষ্টা ঈদ জামাতের দোয়ায় গণআন্দোলনে হতাহতদের জন্যও প্রার্থনা রাখার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “আজকে মুনাজাত হবে, মুনাজাতে আমরা অবশ্যই যেন স্মরণ করি, আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি আমাদের এই নতুন বাংলাদেশ গড়ার যারা সুযোগ করে দিয়েছে, বীর সন্তানরা আত্মাহুতি দিয়েছে, আল্লাহ যেন তাদের রুহের মাগফেরাত দেন, তাদের শান্তি দেন, আমরা মুনাজাতে যেন সেই অংশ রাখি।”

“আর যারা আহত হয়েছেন, যারা স্বাভাবিক জীবন থেকে বিচ্যুত হয়েছেন, এই দেশের জন্য নিজেদের স্বাভাাবিক জীবন ত্যাগ করতে যারা বাধ্য হয়েছেন, তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনের ক্ষমতা দেবার জন্য, রোগমুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে যেন আমরা প্রার্থনা করি।”

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আজকের দিনে আমরা প্রার্থনা করি, যে নৈকট্য আমরা আজকের দিনে শুরু করলাম, এই নৈকট্য এবং এই ঐক্য জাতির জন্য যেন স্থায়ী হয়, আমরা যেন একটা ঐকবদ্ধ জাতি হিসেবে সামনে এগিয়ে যেতে পারি।”

“যারা আত্মত্যাগ করেছেন, যারা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য আত্মহুতি দিয়েছেন, বেঁচে থাকলেও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না, তাদের স্মরণে আমরা যেন মুনাজাত করি আল্লাহর কাছে, আমরা অবশ্যই সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবই। শত বাধা সত্ত্বেও। যত বাধাই আসুক, আমরা ঐকবদ্ধ জাতি হিসেবে এই নতুন বাংলাদেশ গঠন করব ইনশা আল্লাহ। এই মুনাজাতটা আপনারা সকলে মিলে একসঙ্গে করবেন।”

You might also like