‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নয়, এবার হবে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’

16

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ঐতিহ্যবাহী ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।

- Advertisement -

- Advertisement -

শুক্রবার চারুকলা অনুষদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম চঞ্চল।

তিনি বলেন, “এবারের বৈশাখ হবে সবার জন্য। পাহাড় থেকে সমতল—সব জাতিগোষ্ঠী মিলে এবারের বর্ষবরণে অংশ নেবে। একপেশে সংস্কৃতির আয়োজন থেকে বেরিয়ে এবার উদার, অন্তর্ভুক্তিমূলক সংস্কৃতির পথে হাঁটার চেষ্টা করছি আমরা।”

নাম পরিবর্তনের বিষয়ে ড. আজহারুল বলেন, “আমরা এটিকে পরিবর্তন বলছি না, বরং আগের নামটি পুনরুদ্ধার করেছি। ১৯৮৯ সালে যখন এই শোভাযাত্রা শুরু হয়, তখন এর নাম ছিল ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। পরে এটি ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ হয়ে যায়। এখন আমরা মূল নামেই ফিরছি।”

মঙ্গল শব্দ নিয়ে বিতর্ক থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “শব্দ হিসেবে ‘মঙ্গল’-এ কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে এই শব্দ নিয়ে কিছু নেতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়েছে। ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থাও এই শব্দটিকে তাদের মতো করে ব্যবহার করেছে। তাই আমরা এমন একটি নাম বেছে নিয়েছি যেখানে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।”

সংবাদ সম্মেলনে শোভাযাত্রা আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক কাউসার হাসান টগর বলেন, “আমরা ১৯৮৯ সালে যে ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ করেছিলাম, সেখানে ছিলো সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। ১৯৯৬ সালে হঠাৎ নাম হয়ে যায় ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। আনন্দ নামটাই বা বাদ দেওয়া হলো কেন? আনন্দে কী সমস্যা ছিল? সেটির ব্যাখ্যা আজও পাইনি।”

তিনি আরও বলেন, “মঙ্গল শব্দ নিয়ে আমাদের আপত্তি নেই। তবে আনন্দ বাদ কেন, সেটা জানার অধিকার আমাদের আছে। তাই আমরা মূল জায়গায় ফিরে যেতে চাই।”

চারুকলার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবারের বর্ষবরণ আয়োজনেও থাকবে রঙিন মুখোশ, পুতুল ও নানা শিল্পকর্মের প্রদর্শনী। তবে এবার সবকিছুতেই থাকবে আরও বেশি মানুষের অংশগ্রহণ, বৈচিত্র্য ও উদারতার প্রতিফলন।

You might also like