যার যার রীতি অনুযায়ী বৈশাখ উদযাপন করুন: প্রধান উপদেষ্টা

17

নানা মত-ধর্মের মানুষকে নিজেদের রীতি অনুযায়ী বাংলা বর্ষবরণ উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

- Advertisement -

- Advertisement -

তিনি বলেছেন, “আমি বরাবরই বলে এসেছি, নানা মত-ধর্ম-রীতিনীতির মধ্যে আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য। এদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন সম্প্রদায় ও জনগোষ্ঠী- সবমিলিয়ে এদেশের মানুষের বিচিত্র ভাষা-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য।”

“আগামীকাল পহেলা বৈশাখ, আমাদের সম্প্রীতির অন্যতম প্রতীক। প্রত্যেকে নিজ নিজ উপায়ে, নিজেদের রীতি অনুযায়ী আগামীকালকে উদযাপন করবেন। সর্বজনীন এ উৎসবে অংশ নেবেন।”

রবিববার ঢাকার মেরুলে আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে ‘সম্প্রীতি ভবন’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “বাংলা নববর্ষের প্রাক্কালে আমরা আজ ঢাকা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে ‘সম্প্রীতি ভবন’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে যাচ্ছি।

“এমন একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন এবং আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের কর্মকর্তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ। একইসঙ্গে সবাইকে বাংলা নববর্ষের অগ্রিম শুভেচ্ছা। শুভ নববর্ষ।”

সরকারপ্রধান বলেন, “আজকে যেখানে আমি দাঁড়িয়ে আছি, এই আন্তজার্তিক বৌদ্ধবিহার বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অন্যতম নিদর্শন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীসহ বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

“গৌতম বুদ্ধের অহিংসা ও সাম্যের বাণীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং কারিগরি শিক্ষাসহ বিভিন্ন জনকল্যাণকর কর্মসূচি পালন করে আসছে এ বৌদ্ধ বিহার। আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের ‘সম্প্রীতি ভবন’ বাংলাদেশের সম্প্রীতি ও মানবতার ঐতিহ্যকে ধারণ করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গৌরবময় ভূমিকা রাখবে এই আমার প্রত্যাশা। আমাদের সম্প্রীতি ও মানবিক মূল্যবোধের জয় হোক।”

তিনি বলেন, “অতি প্রাচীন সময় থেকেই এ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল এখানকার বৌদ্ধ বিহারগুলো। এগুলো আমাদের ঐতিহ্য ও সভ্যতার নির্দশন।

“পৃথিবীর দূর-দূরান্ত থেকে ভিক্ষু ও ছাত্ররা এ বিহারগুলোতে আসতেন। মহামানব বুদ্ধের শান্তি ও সম্প্রীতির বাণী বিশ্বে ছড়িয়ে দিতেন। শুধু ধর্মীয় আচার ও শিক্ষা নয়, সমাজে জনকল্যাণকর কর্মসূচিরও কেন্দ্র ছিল এদেশের বৌদ্ধ বিহারগুলো।”

ইউনূস বলেন, “মহামানব গৌতম বুদ্ধ বিশ্বমানবতার কল্যাণে সম্প্রীতি ও সাম্যের বাণী প্রচার করেন। বৌদ্ধধর্ম জীবজগতের সকল প্রাণীর মঙ্গল কামনা করে। মহামানব বুদ্ধ বলেছেন, ‘শান্তি, সুখ থেকে আমরা কাউকে বঞ্চিত করতে পারি না; এমনকি ক্ষুদ্র জীবও’।”

“এদেশের বৌদ্ধপণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববরেণ্য একজন মহাপণ্ডিত। মহামানব বুদ্ধের বাণী তিনি বহন করে নিয়েছিলেন সেই মহাচীনের তিব্বতে। চীনে এখনো তাকে সর্বোচ্চ মর্যাদায় শ্রদ্ধা জানানো হয়। বৌদ্ধ ধর্মের নির্দশন, স্থাপনা, ঐতিহ্য ও পণ্ডিতগণ মানব সভ্যতার ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

You might also like