মেঘনা আলমের আটকাদেশ কেন বেআইনি নয়, প্রশ্ন হাইকোর্টের

53

অভিনেত্রী ও মিস আর্থ বাংলাদেশ-২০২০ বিজয়ী মেঘনা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশের বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
রবিবার রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)সহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সারা হোসেন। সঙ্গে ছিলেন কাজী জাহেদ ইকবাল। হাইকোর্টে রিটটি করেছিলেন মেঘনা আলমের বাবা বদরুল আলম।
কাজী জাহেদ ইকবাল বলেন, “মেঘনা আলমের আটকাদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তার বাবা রিট করেছিলেন। আজ আদালত শুনানি শেষে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘলা আলমের ৩০ দিনের আটকাদেশের বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করেছে। রুলে মেঘনা আলমের আটকাদেশের কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মেঘনা আলমের বাবা বদরুল আলম এ রিট করেন।
১০ এপ্রিল বুধবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে মেঘনা আলমকে আটক করা হয়।
আটকের পরদিন বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাবেক এই মিস আর্থ বাংলাদেশকে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. সেফাতুল্লাহর আদালতে তোলা হয়। পরে ডিবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনা আলমকে ৩০ দিন কারাগারে আটক রাখার আদেশ দেয়।
আদেশের পর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী সাংবাদিকদের বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি ক্ষতিকর কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, সেক্ষেত্রে ক্ষতিকর কাজ থেকে তাকে নিবৃত্ত রাখার জন্য আটক করতে পারেন। মডেল মেঘনা আলম ক্ষতিকর কাজের সঙ্গে যুক্ত। যে কারণে তাকে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। আদালত তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিন আটক রাখার আদেশ দেয়।
১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী, ক্ষতিকর কাজ থেকে নিবৃত্ত রাখার জন্য সরকার যেকোনো ব্যক্তিকে আটক রাখার আদেশ দিতে পারবেন। আবার এই আইনের ৩(২) ধারা অনুযায়ী, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট যদি সন্তুষ্ট হন এই আইনের নির্দিষ্ট ধারার ক্ষতিকর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত তাহলে ওই ব্যক্তিকে আটক রাখার আদেশ দেবেন।
বিশেষ ক্ষমতা আইনের যেসব ক্ষতিকর কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিকে আটক আদেশ দেওয়া যায়, সেগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বা প্রতিরক্ষার ক্ষতি করা, বাংলাদেশের সঙ্গে বিদেশি রাষ্ট্রের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সংরক্ষণের ক্ষতি করা, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বা জননিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার ক্ষতি করা, বিভিন্ন সম্প্রদায়, শ্রেণি বা গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণাবোধ বা উত্তেজনা সৃষ্টি করা, আইনের শাসন বা আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা বা উৎসাহ প্রদান করা বা উত্তেজিত করা। এ ছাড়া জনসাধারণের জন্য অত্যাবশ্যক সেবা বা অত্যাবশ্যক দ্রব্যাদি সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করা, জনসাধারণ বা কোনো সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতি বা আতঙ্ক সৃষ্টি করা এবং রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বা আর্থিক ক্ষতি করা।
মেঘনা আলমকে গ্রেফতারের ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, মেঘনা আলমকে যে প্রক্রিয়ায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা সঠিক হয়নি।

- Advertisement -

- Advertisement -

You might also like