যুদ্ধাপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম মুক্তি পেয়েছেন।
১৩ বছর পর বুধবার সকালে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে আসেন এই জামায়াত নেতা।
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতারা তাকে স্বাগত জানান। এ সময় জামায়াত-শিবিরের শত শত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এখন আজহারকে নেওয়া হয়েছে শাহবাগে। সেখানে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন তিনি।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা আজহারকে মঙ্গলবার মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দেয় আপিল বিভাগ। অন্য কোনো মামলা না থাকলে তাকে দ্রুত মুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালতের আদেশের পর তার আইনজীবী শিশির মনির বিকালে এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “ইনশাল্লাহ আশা করি আগামীকাল (বুধবার) সকালে এটিএম আজহারুল ইসলাম ভাই পিজি হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে মুক্তি পাবেন।”
এছাড়া ঢাকা বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) জাহাঙ্গীর কবিরও বিষয়টি জানিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আজহারুল ইসলামের খালাসের কাগজপত্র কারাগারে দেরিতে পৌঁছেছে। যাচাই-বাছাই করে খালাসের নথি কারাগার থেকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিরাপত্তা প্রসঙ্গও থাকায় বুধবার সকালে মুক্তি পাবেন তিনি।
আজহারুল ইসলাম বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কার্ডিয়াক ব্লকে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ জামায়াত নেতার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে রায় দেয়।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বৃহত্তর রংপুরে মানবতাবিরোধী অপরাধের তার বিরুদ্ধে মোট ছয়টি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন সংস্থা। এর মধ্যে পাঁচটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসির রজ্জুতে ঝুলিয়ে আজহারের দণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেওয়া হয়।
এটিএম আজহার একাত্তরে ছিলেন ইসলামী ছাত্র সংঘের জেলা কমিটির সভাপতি। সে সময় তার নেতৃত্বেই বৃহত্তর রংপুরে গণহত্যা চালিয়ে ১৪ শর বেশি মানুষকে হত্যা, বহু নারীকে ধর্ষণ ও অপহরণ, নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছিল বলে ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হওয়ার কথা বলা হয়।
সে সময় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, সংখ্যার দিক থেকে এত বড় গণহত্যার বিচার এ ট্রাইব্যুনালে আর হয়নি।
২০১৫ সালে ১১৩ যুক্তিতে আজহারকে নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়ে আপিল করেন তার আইনজীবীরা। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৯০ পৃষ্ঠার মূল আপিলসহ ২৩৪০ পৃষ্ঠার আপিল দাখিল করা হয়।
২০১২ সালের ২২ আগস্ট মগবাজারের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন।
২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিচার শুরু হয়।
২০১৪ সালে ছয় অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে আজহারকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল।
২০১৯ সালে আপিল বিভাগ সেই রায় বহাল রাখে।
২০২৫ সালের ২৭ মে মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে আজহারকে খালাস দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রায় চার বছর পর ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগও এই রায় বহাল রাখে। এরপর থেকে জামায়াত নেতার রিভিউ আবেদন শুনানির অপেক্ষায় ছিল।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রিভিউয়ের অপেক্ষা থাকা মামলাটি নতুন করে আপিল বিভাগে শুনানি হয়। শুনানি শেষে গতকাল আজহারকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
সর্বোচ্চ আদালতের আদেশের পরদিনই কারামুক্ত হন এই জামায়াত নেতা।
You might also like

সম্পাদক :মোঃ শাহজালাল
২০২৫ © ব্যানারনিউজবিডি কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
🚧 এই সাইটটি বর্তমানে নির্মাণাধীন 🚧
২০২৫ © ব্যানারনিউজবিডি কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
🚧 এই সাইটটি বর্তমানে নির্মাণাধীন 🚧
You cannot print contents of this website.