এইচএসসি: কেন্দ্রের ফটক খুলবে দেড় ঘণ্টা আগে
মায়ের স্ট্রোকজনিত কারণে দেরিতে আসায় আনিসা আহমেদ নামে এক পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়াকে কেন্দ্র করে সমালোচনার মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড নতুন একটি নির্দেশ জারি করেছে।
পরীক্ষা শুরুর দেড় ঘণ্টা আগে, অর্থাৎ সকাল সাড়ে ৮টায় কেন্দ্র খুলে দেওয়ার নির্দেশনা জারি করেছে বোর্ড।
শনিবার ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দারের সই করা জরুরি স্মারকে বলা হয়, “চলমান এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৫-এর পরীক্ষা কেন্দ্রসমূহের আশপাশের যানজট ও জনদুর্ভোগ লাঘবের লক্ষ্যে কেবলমাত্র পরীক্ষার্থীদেরকে কেন্দ্র চত্বরে সকাল ৮.৩০ থেকে প্রবেশের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
“তবে পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ-সংক্রান্ত আগে সব নির্দেশনা বহাল থাকবে।”
এই সিদ্ধান্ত কেন জারি করা হলো এই প্রশ্নে জামাল উদ্দিন হায়দার দেশকাল নিউজ ডটকমকে বলেন, “কারণটা হচ্ছে, গার্জিয়ান ও পরীক্ষার্থী মিলিয়ে অনেক জটলা হয়ে যাচ্ছে মূল রাস্তার ওপরে। আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হচ্ছে, যানজট হয়ে যাচ্ছে এবং বাচ্চারা বেশ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এ কারণে আমরা সাড়ে ৮টায় মেইন গেইট খুলে দেব। সাড়ে ৯টার মধ্যে তাদেরকে ভেতরে ঢুকতে হবে।”
আনিসার কেন্দ্রে আসতে দেরি হওয়ার পর যা ঘটেছে, তার কারণেই এই সিদ্ধান্ত কি না- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে একটা অনুরোধ পেয়েছি যে, আমরা বাচ্চাদেরকে (কেন্দ্রের) সামনে বসিয়ে না রেখে যদি সাড়ে ৮টার মধ্যে কেন্দ্রে ঢুকিয়ে দেই, তাহলে যে যানজটটা হয়, এটা থেকে কিছুটা রেহাই পাওয়া যাবে। সেটার প্রেক্ষিতেই এই কাজটা করা। এর সঙ্গে মেয়েটার কোনো সম্পর্ক নেই।”
প্রতিদিন সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হয়। গত বৃহস্পতিবার পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিন ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরীক্ষার্থী আনিসা আহমেদের বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি।
মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ কেন্দ্রে তিনি উপস্থিত হন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে, কিন্তু তাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পায়, আনিসার মায়ের স্ট্রোক হয়েছিল, তাকে হাসপাতালে দিয়ে কেন্দ্র আসতে আসতে তার দেরি হয়ে যায়। তার কান্নার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে শুক্রবার একটি বিবৃতি আসে। জানানো হয়, আনিসার পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে কীভাবে কী করা যায়, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
একটি পরীক্ষা দিতে না পারলেও আনিসার বাকি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ অবশ্য বন্ধ হয়ে যায়নি। তিনি সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
অবশ্য হবিগঞ্জে ঝর্ণা আক্তার নামে আরেকজন পরীক্ষার্থী বৃহস্পতিবার সময়মতো কেন্দ্রে উপস্থিত হতে পারেননি পথে বাস নষ্ট হয়ে যাওয়ায়। ঢাকার বাইরের এই পরীক্ষার্থীর বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ঝড় তোলেনি আর তার বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে কোনো বার্তাও আসেনি।
আনিসার সেই পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে অবশ্য এখনও ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি।
বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দারের এক প্রশ্নে বলেন, “না, ওর বিষয়ে আমরা এখনও কোনো সিদ্ধান্তে আসিনি।”
বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা বোর্ডের আওতাধীন এইচএসসি পরীক্ষার সব কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।