উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের মাঠে বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের বেশিরভাগকেই নেয়া হয়েছে জাতীয় বার্ণ ইনস্টিটিউটে । দেশের অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসায় এই একমাত্র বিশেষায়িত হাসপাতালটির প্রতিষ্ঠার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা: সামন্ত লাল সেনের নাম । যে কোনো বড় দুর্ঘটনায় রাত-দিন জেগে আগুনে পোড়া মানুষদের চিকিৎসায় দক্ষ এই চিকিৎসক সকলের কাছেই সম্মানিত ছিলেন। বিদায়ী শেখ হাসিনার সরকারের সবশেষ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন সেই কাজের স্বীকৃতি হিসেবে। কিন্তু সরকার পতনের পর তার বিরুদ্ধেও হয়েছে হত্যা মামলা । তাই লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গেছেন তিনি। সোমবার বিমান বিধ্বস্ততের পর জাতীয় বার্ণ ইউনিটে যখন নেযা হয়েছে অধিকাংশ আগুনে ঝলসানো আহতদের তখনই খোজ পড়েছে ডা: সামন্ত লাল সেনের । সামাজিক মাধ্যমেও তার কথা আলোচনা হচ্ছে জোরেশোরে। বিশেষ করে আইন উপদেষ্টা যখন বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনার কথা বলেছেন তখন এ নিয়ে ট্রল শুরু হয় ডা: সডমন্ত লাল কোথায়,সেসব উল্লেখ করেই।
ফেসবুকে অনেকেই লিখেছেন ” অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন রাজনৈতিক মামলায় কারাগারে। আসলে কি তাই? উনি কবে গ্রেপ্তার হয়েছেন? কেউ বলছেন কারাগারে, কেউ বলছেন উনি গ্রেপ্তার হননি।কিন্তু উনি যদি কারাগারে না থাকেন, তাহলে উনি কোথায়? এ বিষয়ে দ্বিমত নেই ডা. সামন্ত লাল সেনকে এখন বড্ড প্রয়োজন। এ জায়গায় ওনার বিকল্প নেই বলে আমারও ধারণা। কিন্তু প্রকৃত সত্যটা জানা প্রয়োজন। আসলে উনি কি কারাগারে? গ্রেপ্তার হয়েছেন? “অভিনেত্রী মেহের আফরোজ তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন , অগ্নিদগ্ধ রোগীদের বিশেষায়িত চিকিৎসা ও প্লাস্টিক সার্জারির জন্য পুরো এশিয়া মহাদেশের অন্যতম সেরা ও অভিজ্ঞ ডাক্তার অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন।রাজনৈতিক মামলার কারণে তিনি এখন দায়িত্বচ্যুত!দল-মত সবকিছু একপাশে সরিয়ে আপাতত উনার প্রজ্ঞা এবং অভিজ্ঞতা কি কাজে লাগানো সম্ভব?অতীতে বহুবার প্রমাণ পাওয়া গেছে যে এধরনের পরিস্থিতিতে তিনি বাংলাদেশের মানুষের পরম নির্ভরতা ও ভরসার প্রতীক।উত্তরার দুর্ঘটনার পর ভয়াবহ এই সময়ে ডা. সামন্ত লাল সেনকে বড্ড প্রয়োজন।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানের জনপ্রিয় উপস্থাপক রেজাউল করিম সিদ্দিক লিখেছেন অক্সিডেন্টাল এর কেস পরিচালনায়সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াডক্টর কামাল হোসেন এর সহায়তা নিয়েছিলেন।মানবিক প্রয়োজনে এই সরকার ডাক্তার সামন্ত লাল সেন এর সহায়তা নিতে পারেন।বড় বড় মানূষের মন আকাশের মতো উদার হতে হয়——-
প্রবাসী সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর লিখেছেন আপনাদের নজর সবসময় বিদেশিদের দিকেই থাকে কেন? কথায় কথায় বিদেশি বিদেশি করেন। আবার যেখানে দরকার সেখানে বিদেশিদের সহায়তা নেন না। ট্যারিফ নিয়ে বিদেশি লবিষ্ট নিয়োগের প্রস্তাবকে পাত্তাই দেন নাই, এখন বাচ্চাগুলো পুড়ে ছাই হচ্ছে- আপনারা এসেছেন- বিদেশি বিদেশি বলে সান্তনা দিতে।
বাচ্চাগুলোর প্রতি সত্যি সত্যি আপনাদের দরদ থাকলে- আমাদের সকল সুবিধাকে কাজালে লাগাতে সহায়তা করেন। বাংলাদেশে বার্ণ ট্রিটমেন্টের পথিকৃত ডা. সামন্ত লাল সেন এর এক্সপার্টিজ ব্যবহার করেন। রাজনীতির চেয়ে মানবিকতা, মানুষের জীবন বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
জানা গেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পরও নিয়মিত বার্ণ ইউনিটে যেতেন ডা: সামন্ত লাল সেন কিন্তু গত বছর ৫ আগস্টে সরকারের পতন হলে তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন বার্ণ উইনিট থেকেও। তার বিরুদ্ধে কমপক্ষে দুটি হত্যা মামলা দেয়া হয়েছে। আবার অর্ন্তবর্তী সরকার আসার পর বার্ণ ইউনিটের আগের অনেক দক্ষ এবং জরুরী অবস্থা মোকাবেলায় দক্ষ অনেক চিকিৎসককেও ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে । জরুরী ভিত্তিতে সেসব টিকিৎসককে সাময়িকভাবে হলেও মাইলস্টোন স্কুলের আহতদের চিকিৎসায় নিয়োজিত করা সম্ভব জলেও মনে করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের একাধিক প্রবীণ চিকিৎসক।