আওয়ামী লীগের সাবেক এমপির বাসায় চাদাবাজির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচজন আটক
রাতেই তিনজনকে স্থায়ী বহিস্কার , চাদা নেয়ার ভিডিও ভাইরাল
রাজধানীর গুলশান এলাকায় আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে তারা চাঁদা দাবি করেছিলেন। এ অভিযোগে গতকাল শনিবার রাতে তাদের আটক করে গুলশান থানায় নেওয়া হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন– বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, আমিনুল ইসলাম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ। আটকের পর গতকাল রাতেই সাংগঠনিক নীতিমালা ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে মুন্না, সিয়াম ও সাদাবকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদ গুলশান ৮৩ নম্বর সড়কের একটি বাসায় বসবাস করেন। গত ১৭ জুলাই আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদসহ তাঁর সহযোগীরা সমন্বয়ক পরিচয়ে ওই বাসায় যান। শাম্মী আহমেদকে পুলিশে ধরে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তারা। সেদিন ১০ লাখ টাকা নেন। গতকাল সন্ধ্যায় রিয়াদ কয়েকজনকে সঙ্গে করে শাম্মীর বাসায় গিয়ে তাঁর স্বামীর কাছে বাকি ৪০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে খবর পেয়ে গুলশান থানা পুলিশ রিয়াদসহ পাঁচজনকে আটক করে।
গুলশান থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, গতকাল রাতে চাঁদার টাকা আনতে গেলে ভুক্তভোগী পরিবার থানায় ফোন করে সহযোগিতা চান। এর পর আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচজনকে আটক করি। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
এদিকে চাঁদার টাকা নেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, ১৭ জুলাই সকাল ১০টার দিকে একটি বাসার গেস্ট রুম থেকে টাকা বুঝে নিচ্ছেন দুই যুবক। গুলশান থানা পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, ভিডিওটি গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডের শাম্মী আহমেদের বাসার।
পাঁচজনকে আটকের পর শনিবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি থেকে তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাংগঠনিক নীতিমালা ও শৃঙ্খলাপরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মুন্না, সিয়াম ও সাদাবকে সাংগঠনিক পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনাম এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে তাদের সঙ্গে কোনোরকম সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো।
এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আটক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।