ইসলামী-এক্সিমসহ ৬ ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াল

দুর্নীতির কারণে প্রায় ধসের মুখে থাকা ১১টি সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকের মধ্যে ছয়টি এরই মধ্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গত ছয় মাসে আমানত সংগ্রহ ও গ্রাহকদের আস্থা পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে এসব ব্যাংক এ উন্নতি করেছে।

- Advertisement -

- Advertisement -

গত বছরের আগস্টে গভর্নর আহসান এচ মনসুর দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ১১টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এটির তারল্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ৩০ হাজার কোটি টাকা নতুন অর্থ সরবরাহ করে এ পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু করে।

ঘুরে দাঁড়ানো ছয়টি ব্যাংক হলো—ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল), এক্সিম ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), আইএফআইসি ব্যাংক ও আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক।

এসব ব্যাংকের বেশিরভাগই এখন আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তারল্য সহায়তার ওপর নির্ভরশীল নয়। সময়োপযোগী হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার নীতি সহায়তার ফলে এগুলো তারল্য সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে।

তবে নতুন উদ্বেগের বিষয় হলো খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া। আগে গোপন থাকা বিপুল পরিমাণ মন্দ সম্পদ (ঋণ) এখন প্রকাশ পাচ্ছে, যা ব্যাংকগুলোর লাভজনক অবস্থায় যেতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

খেলাপি ঋণের প্রকৃত পরিমাণ নির্ধারিত হলে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনে প্রভিশন ফরবিয়ারেন্স সহায়তা বিবেচনা করবে।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ব্যাংকগুলোর প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন যে, শিল্পখাতে গড় খেলাপি ঋণের হার ৩০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছালেও প্রকৃত চিত্র গোপন করা যাবে না।

তবে ১১টির মধ্যে বাকি পাঁচটি ব্যাংক এখনো আমানতকারীদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে এবং আমানত উত্তোলনের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নতুন টাকা ছাপানো বন্ধ করায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ তারল্য সহায়তা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ পাঁচটি ব্যাংক এখনো প্রতিদিন তারল্য সহায়তার জন্য আবেদন করে যাচ্ছে।

এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অপর তারল্য সহায়তা কর্মসূচিও কার্যকারিতা হারিয়েছে, কারণ এ কর্মসূচির আওতায় ঋণ নেওয়া কিছু ব্যাংক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক গত বছরের সেপ্টেম্বরে গ্যারান্টি প্রকল্পের অধীনে সাতটি সংকটাপন্ন ব্যাংককে ২৫ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে এখনো ৭ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।

ফলে গ্যারান্টি প্রকল্পের আওতায় অন্য কোনো ব্যাংক এখন এসব সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংককে ঋণ দিতে আগ্রহী নয়। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ইতোমধ্যে এ প্রকল্প বন্ধের পরামর্শ দিয়েছে, কারণ এটি ব্যাংক খাতকে উচ্চ ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।