কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশ সফর বাতিলের অনুরোধ করেছে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসাক দার।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইসাক দার বলেন, ঢাকা সফর স্থগিতের জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছেন তিনি। বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
আগামী ২৭শে এপ্রিল দুই দিনের সরকারি সফরে ইসাক দারের ঢাকায় আসার কথা ছিল।
গত ১৭ই এপ্রিল পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচের ঢাকা সফরের সময় মন্ত্রী পর্যায়ের এই সফরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়।
কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের চলমান উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত হল।
দু’দিন আগে কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির ঘটনার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের কঠোর প্রতিক্রিয়ার পর প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
হামলার ঘটনায় ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) নামে একটি সংগঠন দায় স্বীকার করেছে। সংগঠনটি পাকিস্তান-ভিত্তিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা।
ঘটনার পর পাকিস্তানের ওপর দায় চাপিয়ে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ভারত। দেশটি সার্ক ভিসার অধীনে পাকিস্তানিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ভারতে থাকা পাকিস্তানিদের ফিরে যেতে সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থল সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে ভারত।
এর পাল্টা জবাবে ভিসা, দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্থগিত, আকাশসীমা বন্ধ করেছে পাকিস্তান।
আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, আঞ্চলিক রাজনীতিসহ বিভিন্ন প্রশ্নে ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্তিমিত ছিল ঢাকার।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্ষমতায় বসা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক ও গভীর করার উদ্যোগ নিয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের বৈঠকও হয়েছে। ওই বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন তারা।