আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা হলো নিউইয়র্কে

ছিল ভাষা আন্দোলনের আলোকচিত্র প্রদর্শনী

11

শুক্রবার বৃষ্টিস্নাত নিউইয়র্কের জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টারে (১৫৩-১০ জ্যামাইকা অ্যাভিনিউ) ৩৪তম আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলার শুভ উদ্বোধন সম্পন্ন হলো। ২৩ মে থেকে চার দিনব্যাপী এ বইমেলা চলবে ২৬ মে পর্যন্ত। গত তিন দশকের চিরাচরিত প্রথায় এবারও বইমেলাটির আয়োজন করেছে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন। বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তুলে ধরার জন্য এ মেলায় অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানা প্রান্তের লেখক, কবি, সাহিত্যিক ও প্রকাশকরা। বইমেলার উদ্বোধন করেছেন লেখক সাদাত হোসাইন। বইমেলায় লেখকের সঙ্গে পাঠকের সরাসরি আড্ডা, নতুন বই নিয়ে আলোচনা, কবিতা পাঠ, আবৃত্তি, বিতর্ক, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একইসঙ্গে থাকছে ‘অমর একুশ: ভাষা-আন্দোলনের সচিত্র ইতিহাস (১৯৪৭–১৯৫৬)’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী। এর আয়োজন করছে যুক্তরাষ্ট্রের একুশে চেতনা পরিষদ।

- Advertisement -

- Advertisement -

উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন মার্কিন বন্ধু ফিলিস টেইলর। তার প্রয়াত স্বামী রিচার্ড টেইলর ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া ও বাল্টিমোর বন্দরে অস্ত্রবাহী জাহাজ অবরোধ করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পাকিস্তানে গোপনে অস্ত্র পাঠানোর বিরুদ্ধে এ প্রতিরোধ আন্তর্জাতিক পরিসরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বইমেলায় প্রধান অতিথির ভাষণে বলেন-‘আমি যখন এই মঞ্চে আলো দেখি আমি দেখতে পাই সেই আলোকিত মানুষদের যাঁরা ৭১ সালে একটি জাতির জন্যে কাজ করেছিলেন। তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ যাঁরা আমাকে এখানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আপনারা জানেন আমার স্বামী রিচার্ড টেইলর মুক্তিযুদ্ধের সময় আমেরিকার যুদ্ধজাহাজ ব্লক করার জন্যে নিজেকে নিবেদন করেছিলেন। এবং এই নিয়ে তিনি একটি ’ব্লকেড’ নাম দিয়ে একটি গ্রন্থও রচনা করেছিলেন। আজ তিনি নেই কিন্তু এটা পরিস্কার যে তিনি আমাদের সঙ্গে আজ এই এখানেই আছেন। তাঁকে গভীরভাবে স্মরণ করছি।’

অনুষ্ঠানে আরো ছিলেন বীর প্রতীক ক্যাপ্টেন (অব.) ডা. সিতারা বেগম। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. রেহমান সোবহান, ভাষাতাত্ত্বিক ও অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক রওনক জাহানসহ আরো অনেকে। সম্মানিত বিশেষ অতিথি রেহমান সোবহান বলেন-‘এটি খুব আনন্দের জন্যে যে এখানে আজ আমি উপস্থিত হয়েছি যেখানে ফিলিস টেইলর উপস্থিত আছেন। তাঁকে এবং তাঁর স্বামী রিচার্ডকে অন্তঃস্থল থেকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি আন্তরিকভাবে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানাই। তাঁরা ৩৪তম আন্তর্জাতিক বইমেলা আয়োজন করছেন। এটি আমাদের ভংগুর এবং ক্ষীয়মান সংস্কৃতিকে মজবুত করতে সাহায্য করবে।’ গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক বিশেষ অতিথি হিসেবে বলেন-‘বইমেলা জিনিসটা আমার কাছে অন্যরকমের। আমার খুব প্রিয় জিনিস। আমি কোথাও যাই না। কিন্তু বইমেলার কথা শুনে আমি ছুটে আসি। আমার মার কথা খুব মনে হচ্ছে। তিনি বীরাঙ্গনাদের জন্যে অনেক কাজ করেছেন। ১৯৭৩ সালে আমরা মার সঙ্গে ঢাকায় এসেছিলাম। আমার এক অসাধারণ সময় কেটেছে। আমার বাবা তখন ঢাকায় উচ্চ সরকারি চাকুরে কাজ করতেন।’

You might also like