ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় ৪০টিরও বেশি রুশ যুদ্ধবিমান ‘ধ্বংস’

2

ড্রোন হামলা করে ৪০টির বেশি রাশিয়ান যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দাবি করেছ ইউক্রেন।

- Advertisement -

- Advertisement -

বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনী (এসবিইউ) রবিবার বলেছে, এটি রাশিয়ার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তাদের সবচেয়ে বড় আকারের ড্রোন হামলা।

এসবিইউ জানিয়েছে, “শত্রু স্ট্র্যাটেজিক বোম্বার বিমানগুলি রাশিয়ায় ব্যাপকভাবে আগুনে ঝলসানো হচ্ছে।”

ইউক্রেনের এই বিশেষ অভিযানের লক্ষ্য ছিল শত্রুর বোম্বার বিমান ধ্বংস করা।

হামলার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে তারা, যাতে ইরকুতস্ক অঞ্চলের বেলায়া বিমানঘাঁটিতে ড্রোন হামলার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। ভিডিওতে বোম্বার বিমানগুলোর ওপর বিস্ফোরণ ও ধোঁয়া ওঠার দৃশ্য স্পষ্ট।

ইউক্রেন জানিয়েছে, তাদের অভিযানে মোট ৪৭২টি ড্রোন এবং সাতটি ব্যালেস্টিক ও ক্রুজ মিসাইল ব্যবহার করা হয়েছে।

ইউক্রেন বলছে, তারা আকাশ পথে আসা ৩৮৫টি লক্ষ্যবস্তু নিরস্ত্র করতে সক্ষম হয়েছে।

অন্যদিকে, রাশিয়ান গণমাধ্যম রাশিয়ান টাইমস (আরটি) হামলার খবর প্রকাশ করে বলছে, এ ধরনের হামলা রাশিয়ার ইরকুতস্ক অঞ্চলের সাইবারে প্রথম।

আরটিকে আঞ্চলিক গভর্নর ইগর কোবজেভ জানান, হামলাটি সংঘটিত হয়েছে স্রেদনি নামক এক বসতির কাছে, যা বৈকাল হ্রদের কাছাকাছি এবং ইরকুতস্ক শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে।

কোবজেভ আরও জানান, পাশের নোভোমালটিনস্ক গ্রামে একটি পরিত্যক্ত ভবনেও ড্রোন আঘাত হানে।

আরটি জানিয়েছে, ড্রোনগুলো একটি ছোট ট্রাক থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। যদিও ঠিক কতগুলো ড্রোন হামলায় অংশ নিয়েছে তা স্পষ্ট নয়, তবে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে অন্তত তিনটি ড্রোন হামলায় অংশ নিয়েছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। যদিও সেসব ফুটেজ যাচাই করতে পারেনি রাশিয়ান টাইমস।

গভর্নর কোবজেভ বলেন, “ড্রোন উৎক্ষেপণ স্থলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং সাধারণ জনগণের জীবন ও স্বাস্থ্যের কোনো হুমকি নেই।”

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেন একাধিকবার রুশ ভূখণ্ডে ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এই হামলাগুলোকে শান্তিপূর্ণ আলোচনার প্রচেষ্টা ব্যাহত করার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

এই হামলার জবাবে মস্কো ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা শিল্প স্থাপনা, সেনা সমাবেশস্থল ও অস্ত্রগুদামে পাল্টা হামলা চালিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

ইরকুতস্কের এই হামলার সময়, রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় মুরমানস্ক অঞ্চলেও একই ধরনের একটি ড্রোন হামলার খবর পাওয়া গেছে, যদিও এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনও প্রকাশ করা হয়নি।

বিশেষজ্ঞরা ইউক্রেনের ওপর ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক হামলার আহ্বান জানিয়েছেন।

রুশ সামরিক বিশ্লেষক এবং ব্লগার রোমান আলেখিন লিখেছেন, “এটি রাশিয়ার ‘পার্ল হারবার’। আমরা আশা করি, এই হামলার জবাব যুক্তরাষ্ট্র যেমন পার্ল হারবারের জবাব দিয়েছিল, তেমনই শক্তিশালী হবে, বরং তার থেকেও কঠোর।”

বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন এই ঘটনা ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘর্ষে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যেখানে দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সামরিক সুবিধা অর্জনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইউক্রেনের এই অভিযানের ফলে রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতার ওপর বড় আঘাত এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

You might also like