সকালেও থামেনি বিক্ষোভ, উত্তাল যমুনার আশপাশ
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’র সামনে রাত থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ আজও অব্যাহত রয়েছে।
শুক্রবার সকালেও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কয়েক শ নেতাকর্মী যমুনার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। তার সঙ্গে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরাও যোগ দিয়েছেন। তাদের স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে যমুনার আশপাশ এলাকা।
বিক্ষোভকারীরা ‘ব্যান করো ব্যান করো, আওয়ামী লীগকে ব্যান করো’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’ এবং ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামী লীগ নো মোর’সহ নানা স্লোগান দিচ্ছেন।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা ও দলটির নেতাদের বিচারের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে বিক্ষোভকারীরা জানান।
তাদের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যমুনামুখী ও এর চারপাশের রাস্তায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অভ্যূত্থানের অংশ নেওয়া শক্তিগুলো আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি তোলে। জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) সবসময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তুলে আসছে।
বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগের বিষয়ে সিদ্ধান্তের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে এনসিপির নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ। রাত দশটার দিকে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার সামনের রাস্তায় প্রবেশ করে অবস্থান নেন তারা।
এরপর জুলাই আন্দোলনকেন্দ্রীক ৩৫টি প্লাটফর্মের জোট জুলাই ঐক্য যমুনায় এসে সংহতি জানান। পরে একে একে আসতে শুরু করেন হেফাজত ইসলাম, ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতারা ও জুলাই অভ্যুত্থানের আহতরা।
রাত একটার দিকে যমুনার সামনে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ শীর্ষ নেতারা।
রাতে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দায়িত্ব ছিল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা। আমরা সরকারের বাইরে এবং ভেতরে সেই দাবি বলেছি। কিন্তু আজকে নয় মাস পরেও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের জন্য আমাদের আবার রাজপথে নামতে হয়েছে।
আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকা কয়েকজন নেতা জানান, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা যমুনা ছাড়বেন না। যমুনার সামনের রাস্তায় জনতার মঞ্চ তৈরির পরিকল্পনা করছেন তারা।
এনসিপির অবস্থান কর্মসূচি শুরুর আগমুহুর্তে রাত পৌনে দশটার দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন।
সেখানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
পোস্টে আসিফ মাহমুদ লিখেন, সপ্তাহখানেক আগেই প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বিষয়টি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।