ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের মিছিল-সমাবেশের পাশাপাশি অনলাইনে প্রচারেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সোমবার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ কথা বলা হয়।
প্রজ্ঞাপনে লেখা, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কর্তৃক যে কোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে কোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।”
গত শনিবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
একই বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ব্যক্তির পাশাপাশি সংগঠনের বিচারের সুযোগ রাখার বিধানও হয়, যদিও গত ২৪ নভেম্বর এই বিষয়টি বাদ দিয়ে আইন সংশোধন করেছিল সরকার।
আওয়ামী লীগের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ গত বুধবার রাতে বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার পর জাতীয় নাগরিক-পার্টি- এনসিপির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জমায়েতের ডাক দেন। পরে সেই জমায়েতে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন দল অংশ নেয়।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বিক্ষোভে নামার দুই দিনের মধ্যে আসে সরকারের সিদ্ধান্ত।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের খসড়া প্রজ্ঞাপনে নবম সংসদ নির্বাচনের পর ক্ষমতায় আসার দিন ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য ও ভিন্নমতের মানুষের উপর হামলা, গুম, খুন, হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন নিপীড়নমূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়।
এতে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে ‘গুম, খুন, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, গণহত্যা, বেআইনি আটক, অমানবিক নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাসী কার্য ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে এবং এসব অভিযোগ দেশি ও আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে ‘প্রতিষ্ঠিত’ হয়েছে।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং ফৌজদারি আদালতে ‘বহুসংখ্যক’ মামলার কথাও তুলে ধরা হয় প্রজ্ঞাপনে।
সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর মিছিল, লিফলেট বিতরণ এবং বিদেশে অবস্থানকারী নেতারা সামাজিক মাধ্যমে ‘অপরাধমূলক বক্তব্য’ দিচ্ছেন উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লিখেছে, এসব কর্মকাণ্ডে “ব্যক্তি ও প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের প্রচেষ্টাসহ আইন-শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত হয়েছে।
এসব কর্মকাণ্ডে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা ‘হুমকির মুখে পড়েছে’ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লিখেছে, “দলটি (আওয়ামী লীগ) এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার বাদী ও সাক্ষীদের মনে ভীতির সঞ্চার করা হয়েছে ও এভাবে বিচার বিঘ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং সার্বিকভাবে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।”
আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল ও অকার্যকর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকে জনমনে ভীতি সঞ্চারের উদ্দেশ্যে ‘সন্ত্রাসী সংগঠনের ন্যায়’ বেআইনি কার্যকলাপ ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে বলেও অভিযোগ এনেছে মন্ত্রণালয়।
You might also like

সম্পাদক :মোঃ শাহজালাল
২০২৫ © ব্যানারনিউজবিডি কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
🚧 এই সাইটটি বর্তমানে নির্মাণাধীন 🚧
২০২৫ © ব্যানারনিউজবিডি কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
🚧 এই সাইটটি বর্তমানে নির্মাণাধীন 🚧
You cannot print contents of this website.