ইসি পুনর্গঠনের দাবিতে বুধবার বিক্ষোভ এনসিপির

0

নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে ইসির সামনে বুধবার বিক্ষোভ করবে জাতীয় নাগরিক কমিটি (এনসিপি)।
মঙ্গলবার রাতে এনসিপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির কথা জানানো হয়।
এনসিপি বলছে, ইশরাকের মামলা নিয়ে ইসি উচ্চ আদালতে না গিয়ে তাকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অবৈধ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকাই দায়ী। ‘ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস গং’ মামলার বিবাদী হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি, যার ফলে একতরফা রায় প্রদান করা হয়েছে।”
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে আখতার বলেন, “এমনকি রায়ের পরে তারা উচ্চ আদালতে প্রতিকার প্রার্থনা না করে মামলার বাদীকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে। তারা নিরপেক্ষ আচরণ না করে যেসব বক্তব্য দিয়েছে, যার সাথে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের অবস্থানের যোগসাজস রয়েছে।”
আখতার বলেন, “বর্তমান নির্বাচন কমিশন অবৈধ ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার প্রণীত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২’ অনুযায়ী গঠিত, যা সে সময় সকল রাজনৈতিক দল প্রত্যাখ্যান করেছিলো। এছাড়াও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনার আগেই নির্বাচন কমিশন গঠন করার ফলে নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনার প্রতিফলন ঘটবে না।”
“যেমন পলাতক ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ সংক্রান্ত সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবকে নাকচ করেছে বিদ্যমান নির্বাচন কমিশন। এর ফলে এই কমিশনের উপর আস্থা রাখা সম্ভব নয়।”
এনসিপির লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “জনপ্রতিনিধি না থাকায় নাগরিক সেবা প্রদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, এবং সামাজিক সুরক্ষা উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। এ সংকট নিরসনে এবং জনদুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনই একমাত্র সমাধান।”
নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে ‘সক্ষম’ নয় বলে মনে করছে এনসিপি।
সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব আমলে নিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে আখতার বলেন, “এই দাবিতে বুধবার ঢাকা মহানগর এনসিপিরি উদ্যোগে সকাল ১১টায় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “স্থানীয় সরকার নির্বাচন আজ প্রথম চাচ্ছি না, এর আগেও বলেছি। নির্বাচন কমিশন যে ত্রুটিপূর্ণ, এটাও আমরা এর আগে বলেছি। উদ্ভুত পরিস্থিতির সমাধান হিসেবে, রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব ও কর্তব্য হিসেবে আমরা এই কথা বলছি। এছাড়া বিএনপির বা অন্য কোনো দলের যদি শঙ্কা থাকে জাতীয় নির্বাচন পেছানো…সেক্ষেত্রে আমরা তো বলি নাই যে জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে হবে। প্রয়োজনে গণপরিষদ নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাক। ঘোষণা হয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করে তার আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিয়ে দিক, আমাদের সেই বিষয়ে কোনো আপাতত নেই।”
“কিন্তু এখন যে সারাদেশে নাগরিকরা সেবা পাচ্ছে না, এবং অবৈধ নির্বাচনের প্রার্থীরা আদালতে দৌড়াদৌড়ি করছে। নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শন করছে। এগুলো একটা সংকটময় অবস্থা তৈরি করছে। ফলে এই সংকট থেকে বের হতে হলে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে। আর স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমেই জাতীয় নির্বাচনের একটা পরিবেশ তৈরি হবে।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী ও যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনিম জারা।
এনসিপির আত্মপ্রকাশের দিন সংসদ নির্বাচনের আগে গণপরিষদ নির্বাচন ও নতুন সংবিধান প্রণয়ের দাবি তুলেছিল দলটি।
গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ক্ষমতায় বসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরপর থেকে বিএনপি সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। দলটির এক সময়ে জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামী প্রথমে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি তুলেছিল। সেসময় সরকারের একাধিক উপদেষ্টাও স্থানীয় সরকারি নির্বাচনে কথা তুলেছিলেন।
এরমধ্যে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে আন্দোলনে নেমেছে তার সমর্থকরা।

- Advertisement -

- Advertisement -

You might also like