অনৈক্যের পেছনে আওয়ামী লীগ: নাহিদ

4

প্রধান উপদেষ্টার সরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশের পর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতাদের মধ্যে বিভক্তির যে লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, সে জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
একজন সংবাদকর্মী প্রশ্ন রাখেন, “অনেকেই মনে করেন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে অনৈক্যের সৃষ্টি সেটির অনেকাংশে দায়ী এনসিপির নেতারা। আপনারাও সে রকম মনে করেন কি না।”
জবাবে নাহিদ বলেন, “আমরা মনে করি এই অনৈক্যের পেছনে আছে আওয়ামী লীগ। তারা চায় না ঐক্য থাকুক।”
বাংলাদেশ যেন ‘শক্তিশালী রাষ্ট্র’ হিসেবে গড়ে উঠতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশকে কখনও ঐক্যবদ্ধ হতে দেওয়া হয়নি বলেও মন্তব্য করেন এনসিপি নেতা।
তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদ মুক্ত রাখতে হলে ঐক্যের জায়গা ধরে রাখতে হবে। জাতীয় নাগরিক পার্টি শুরু থেকে দায়িত্বশীল আচরণ করে আসছে। এককভাবে আমাদের ওপর দায় চাপালে হবে না।”
গত বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করার পর গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা সামাজিক মাধ্যমে একে অন্যকে দায়ী করে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলতে থাকেন। তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এক স্ট্যাটাকে অতীতের ‘বিভাজনমূলক’ বক্তব্য ও শব্দচয়নে দুঃখও প্রকাশ করেন।
এই পরিস্থিতিতে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ফের ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা সতর্ক করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসলে কাউকে ছাড়বে না।
নাহিদ ইসলাম অনৈক্যের জন্য বিএনপিকেও দায়ী করে বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, “আমরা সবসময় সংষ্কার, বিচার, নির্বাচন ও জুলাই ঘোষণাপত্রের কথা বলেছি। বিএনপি শুধু নির্বাচনের কথা বলে গিয়েছে। এই নির্বাচন আমাদের অন্যতম আকাঙ্ক্ষা কিন্তু একমাত্র গণআকাঙ্ক্ষা না।”
ভিন্নমত থাকবে বলে মন্তব্য করে এনসিপি নেতা বলেন, “কিন্তু দেশের স্বার্থে ঐক্যের জায়গায় যেতে হবে। সেজন্য আমরা যে কোনো আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছি।”
দুই উপদেষ্টার সঙ্গে এনসিপির সম্পর্ক নেই
যে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই বলেও মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, “তারা রাজনীতি করতে চাইলে সরকারে থেকে তারা সেটি পারবে না। সেখান থেকে বের হয়ে তাদের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।”
দুই উপদেষ্টাকে এনসিপির সঙ্গে সংযুক্ত করে এক ধরনের অপপ্রচার বা তাদের হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন নাহিদ, বলেন. “এটির আমরা নিন্দা জানাই।”
দুই উপদেষ্টা সরকারে ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি’ হিসেবে গিয়েছে বলে মন্তব্য করে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, “শহীদ ও আহতদের পুনর্বাসন, গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে তদারকি করতেই তারা সেখানে গিয়েছে।”
নাহিদ ইসলাম নিজেও সরকারে ছিলেন। ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট তিনি ও আসিফ মাহমুদ শপথ নেন। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষে নাহিদ পদত্যাগ করেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি এনসিপি আত্মপ্রকাশের পর দলটির আহ্বায়কের দায়িত্ব নেন।
এনসিপি গণপরিষদ ও জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে চাইলেও এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাওয়ার বিষয়েও নাহিদকে প্রশ্ন রাখেন এক সংবাদকর্মী।
কোনটা কখন হলে মেনে নেবেন- এই প্রশ্নে এনসিপি নেতা বলেন, “আমরা গণপরিষদ ও আইনসভা নির্বাচন চাই যেটা আমাদের নতুন সংবিধান নিশ্চিত করবে। তবে এখন যেহেতু মেয়র পদ নিয়ে আদালতের রায়সহ নানা বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে তাই আমরা মনে করি, অতিদ্রুত স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব। সেটির জন্য নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দিকে যাওয়া উচিত।”

- Advertisement -

- Advertisement -

You might also like