সংসদ নির্বাচনের জন্য ‘এপ্রিল মাস কোনোভাবেই উপযোগী নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার ঈদের দিন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এপ্রিল মাস জাতীয় নির্বাচনের জন্য কেনো অনুপযোগী তার কারণ জানাতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “যে সময়টি (এপ্রিল মাস) নির্ধারণ করা হয়েছে সেই সময়টি বাংলাদেশে নির্বাচনের জন্য সঠিক সময় নয়। এখানে (এপ্রিল মাস) আপনার প্রচণ্ড গরম, ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে…ওই সময়টি রোজার পর পরই…পাবলিক পরীক্ষা আছে। সময়টা খুব চিন্তা করে দেওয়া হয়েছে বলে আমাদের কাছে মনে হয় না।”
শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দেন।
এই ঘোষণার পর বিএনপি প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
বিএনপির মতে, ওই ভাষণে প্রধান উপদেষ্টার শব্দচয়ন রাজনৈতিক ‘ভব্যতার সীমা লঙ্ঘন’ করেছে, যা দলটি ‘গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে’ গ্রহণ করেছে। এই ঘোষণার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন উপযুক্ত সময়ে আপনাদের কাছে নির্বাচনের বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রদান করবে।”
সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল বলেন, “এছাড়া নির্বাচনী প্রচারণা করতে হবে রোজার মাসে যেটা ডিফিকাল্ট হবে। আমাদের যে রিমার্কস সেটা আমাদের স্ট্যাডিং কমিটি গতকাল রাতেই সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা মতামত জানিয়েছেন। আমরা মনে করি যে, ডিসেম্বরই নির্বাচন হওয়া সম্ভব এবং সেটাই জাতির জন্যে সবচেয়ে উপযোগী হবে।”
২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম সাপ্তাহের কোনো একটি দিন জাতীয় নির্বাচন হবে বলে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস যে ঘোষণা দিয়েছেন সে সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা গতকালই আমাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি। আমাদের বরাবরই দাবি ছিল যে, আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছিলাম… জনগণের প্রত্যাশাও তাই ছিল। প্রত্যাশা জনগণের পুরুন হয়নি।”
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপি মহাসচিব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সালাহ উদ্দিন আহমদ ও এজেডএম জাহিদ হোসেনকে নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং পরে প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
এ সময় দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, আবদুল হালিম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, রফিকুল ইসলাম, সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, মীর নেওয়াজ আলী, আমিনুল হক উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০০৮ সালে কারাগারে যাওয়ার আগে প্রতি ঈদে জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতেন। চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে দলের মহাসচিব স্থায়ী কমিটির সদস্যরা দলের প্রতিষ্ঠাতার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “দলের পক্ষ থেকে, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে থেকে আমি দেশবাসীকে ঈদ মোবারক জানাচ্ছি, শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।”