খালেদা জিয়া ফিরলেন, তারেক কবে?
খালেদা জিয়া ফিরলেন, ছেলে তারেক রহমান কবে ফিরবেন? এই প্রশ্নে বিএনপির এক শীর্ষ নেতা এখনও সুনির্দিষ্ট সময় না জানিয়ে ‘শিগগির’ শব্দ ব্যবহার করে ফেরার পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার অপেক্ষার কথা বলেছেন।
১৭ বছর পর দেশে ফেরা তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান আবার যুক্তরাজ্যে গিয়ে সব কিছু গোছগাছ করে ফিরবেন বলেও জানিয়েছেন সেই নেতা।
বিএনপি নেত্রী দেশে ফেরার পর মঙ্গলবার সংবাদকর্মীদের এক প্রশ্নে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন সংবাদকর্মীদেরকে এভাবেই প্রতিক্রিয়া দেন।
তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে, যাতে করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও দেশে ফিরে জাতির নেতৃত্বে যোগ দিতে পারেন।”
সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার এক বছর পর তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে চিকিৎসার জন্য যান। আওয়ামী লীগ শাসনামালে একাধিক মামলায় তার সাজা ঘোষণা হয় যার মধ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাও ছিল।
তবে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সব সাজা থেকে খালাস পান বিএনপি নেতা, তার বিরুদ্ধে যেসব মামলার তদন্ত চলছিল, সেগুলো হয় প্রত্যাহার হয়েছে, নয় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া সাজা নিয়ে কারাগারে যাওয়ার পরই তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানায় বিএনপি। এরপর থেকে দল পরিচালনায় তার সিদ্ধান্তই প্রাধান্য পাচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তার বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞাও উঠে গেছে।
বর্তমান সরকারকে সমর্থন, সংস্কার উদ্যোগ ও বিএনপির রাজনৈতিক রূপরেখা নিয়েও নিয়মিত কথা বলছেন তারেক।
১৭ বছর পর খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঢাকায় আসা বড় পুত্রবধূ জোবাইদা রহমানকে নিয়েও কথা বলেন জাহিদ হোসেন। বলেন, “১৭ বছর পর তিনি (জোবাইদা) এসেছেন। এটা কেবল শুরু না। তারা তাদের দেশে আসবেন—এটাই স্বাভাবিক।
“তার স্বামী-সন্তান এখনো বিদেশে। তিনি এখন দেশনেত্রীর সঙ্গে এসেছেন, আবার ফেরত যাবেন। সেখানে সব গুছিয়ে সময়মতো আবার আসবেন।”
খালেদা জিয়া, জোবাইদা রহমান ও শর্মিলা রহমানকে সোমবার যুক্তরাজ্যের হি থ্রো বিমানবন্দরে বিদায় জানিয়েছেন তারেক রহমান। তবে তিনি কবে ফিরবেন, সে বিষয়ে কিছু জানাননি।
২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তারের পরের বছর চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান তারেক রহমান। জোবাইদা রহমানও সে সময় তার সঙ্গে যান। খালেদা জিয়ার ছোট ছেলের স্ত্রী শর্মিলা রহমান গত কয়েক বছরে একাধিকবার দেশে ফিরলেও জোবাইদা ফেরেননি।
খালেদা জিয়ার যাতায়াতের জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্ম দেওয়ায় কাতার আমিরের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন জাহিদ। বলেন, “কাতার সরকার শুধু এয়ার অ্যাম্বুলেন্সই দেয়নি, চিকিৎসা, ওষুধ এবং বিমানের সব খরচও বহন করেছে। দেশনেত্রী কাতার সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।”
সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশসহ অন্যান্য সরকারি সংস্থাগুলোকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। বলছেন, তারা ‘মানবিক দৃষ্টিকোণ’ থেকে খালেদা জিয়ার দেশে প্রত্যাবর্তনে সহযোগিতা করেছে।