যমুনার সামনে অবস্থান নিয়ে মব তৈরি করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মেয়র হিসেবে শপথ করাতে হাইকোর্টের রায় নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা রিট হাইকোর্ট খারিজ করার পর বৃহস্পতিবার ফেসবুকে এক পোস্ট দিয়ে এমন মন্তব্য করেন সারজিস।
প্রশ্ন করে এনসিপির এই নেতা লিখেছেন, মব তৈরি করে যদি হাইকোর্টের রায় নেওয়া যায় তাহলে এই হাইকোর্টের দরকার কি?
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সবশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস।
ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে।
এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তবে ইশরাকের শপথ অনুষ্ঠান এখনও না হওয়ায় এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে নগর ভবন অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ইশরাকের সমর্থকরা।
বিক্ষোভ চলাকালে তারা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগ দাবি করেন। আসিফ মাহমুদের কুশপুতল নিয়েও বিক্ষোভ করেন ইশরাক সমর্থকরা। তাকে নিয়ে নানা স্লোগান দেয়।
নগর ভবনে ইশরাক সমর্থকদের এমন কর্মসূচির পাল্টায় মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি। সেখানে দলটি অভিযোগ করে, ইশরাকের মামলা নিয়ে ইসি উচ্চ আদালতে না গিয়ে তাকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে।
সেদিন লিখিত বক্তব্যে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অবৈধ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকাই দায়ী। ‘ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস গং’ মামলার বিবাদী হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি, যার ফলে একতরফা রায় প্রদান করা হয়েছে।”
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে আখতার বলেন, “এমনকি রায়ের পরে তারা উচ্চ আদালতে প্রতিকার প্রার্থনা না করে মামলার বাদীকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে। তারা নিরপেক্ষ আচরণ না করে যেসব বক্তব্য দিয়েছে, যার সঙ্গে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের অবস্থানের যোগসাজস রয়েছে।”
দুই দলের এমন অবস্থানের মধ্যে বৃহস্পতিবার ইশরাককে নিয়ে করা রিট খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। রায়ে ইশরাকের মেয়র পদে শপথ পড়াতে বাধা নেই বলে জানান উচ্চ আদালত।
হাইকোর্টের রায়ের পর সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে সারজিস আলম লিখেন, মব তৈরি করে যদি হাইকোর্টের রায় নেওয়া যায় তাহলে এই হাইকোর্টের দরকার কি?
এর কিছু সময় পরই আরেকটি পোস্ট দেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের এই মুখ্য সংগঠক।
সেখানে তিনি লিখেছেন, “টাকা আর রাজনৈতিক দলের সুপারিশে অনেক হত্যাকারী আওয়ামী লীগারের জামিন হয়ে যায়। টাকা আর রাজনৈতিক সুপারিশ নাই বলে আওয়ামী আমলে জুলুমের শিকার অনেক মজলুমের জামিন হয় না।
“শাপলা হত্যাকাণ্ডে হেফাজতের ওপরে চাপানো মিথ্যা মামলায় অনেক মজলুম আলেম এখনো আদালতে চক্কর কাটে, কারাগারে বন্দি থাকে। অথচ এমন অনেক দাগি আসামি বিগত কয়েক মাসে জামিন পেয়েছে, যারা বিএনপির সাথে সংযুক্ত হলেও বিএনপির সময়ে তাদের কৃতকর্ম ও অপরাধের জন্য জেলে গিয়েছে। এগুলো কিভাবে হয়? কার সুপারিশে হয়? কোন আইনজীবী এবং বিচারকের প্রত্যক্ষ মদদে হয়?’
সারজিস আলম আরও লিখেছেন, ‘প্রকাশ্য দিবালোকে হাসিনার নির্দেশে এতগুলো মানুষ খুন হলো, এতগুলো মানুষের রক্ত ঝরল, তারপরও নয় মাসে একটা বিচারকার্য সম্পন্ন হয় না! একটা খুনের বিচার হয় না! এই দায় আইন উপদেষ্টা হিসেবে আসিফ নজরুল স্যার কি কোনোভাবে এড়াতে পারে? তাহলে কি আমাদের এখন তার পদত্যাগ চাওয়া উচিত নয়?’
You might also like

সম্পাদক :মোঃ শাহজালাল
২০২৫ © ব্যানারনিউজবিডি কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
🚧 এই সাইটটি বর্তমানে নির্মাণাধীন 🚧
২০২৫ © ব্যানারনিউজবিডি কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
🚧 এই সাইটটি বর্তমানে নির্মাণাধীন 🚧
You cannot print contents of this website.