ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরার পথে উত্তরের মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। যমুনা সেতুর দুই প্রান্তে প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গাড়ির দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঢাকায় ফেরার পথে হাজারো যাত্রী ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন।
শনিবার সকালে যমুনা সেতুর টাঙ্গাইল অংশে ২২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দীর্ঘ যানজট দেখা গেলেও পরবর্তীতে তা কিছুটা কমে এসেছে। বর্তমানে সেতু থেকে টাঙ্গাইলের বিক্রমহাটি পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট চলছে।
যমুনা সেতু পূর্ব থানার ওসি ফয়েজ আহমেদ বলেন, “মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেশি। গভীর রাতে সেতুর ওপর পিকআপ ও ট্রাকের সংঘর্ষের কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ কাজ করছে, খুব দ্রুত যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।”
এলেঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি শরীফ বলেন, “ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জ রোডে যানবাহনের চাপ রয়েছে। ভোর থেকে মহাসড়কে ধীরগতি হয়েছে।”
ঈদযাত্রার সময় ঢাকা-টাঙ্গাইল-সিরাজগঞ্জ মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশে যানজট থাকলেও সিরাজগঞ্জ অংশ ছিল বেশ ফাঁকা। এই অংশে নির্বিঘ্নে চলাচল করেছি গাড়ি।
কিন্তু ফিরতি যাত্রায় উল্টো চিত্র দেখা গেছে। সেতুর পশ্চিম অংশেও ভোগান্তি বেড়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ ও হাইওয়ে কর্তৃপক্ষ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
শনিবার সকাল ১১টার দিকে যমুনা সেতুর টোল প্লাজা থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকায় যানজট দেখা দিয়েছে। তবে ঢাকা থেকে উত্তরের পথে যানবাহন নির্বিঘ্নে চলাচল করছে।
তীব্র গরম আর দীর্ঘ সময় সড়কে আটকে থাকার কারণে হাজারো যাত্রী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বিশেষ করে নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের ওপর এর প্রভাব বেশি পড়েছে।
গাজীপুরগামী যাত্রী রুবেল হোসেন বলেন, “সকাল সাতটা থেকে গাড়িতে বসে আছি। এখনো টোলপ্লাজা পার হতে পারিনি। বাচ্চাটা অসুস্থ, পানি-টানিও ঠিকমতো নেই। কষ্টের শেষ নেই।”
তাসনুভা আক্তার নামে এক নারী যাত্রী বলেন, “অসুস্থ মা আর ছোট ভাইকে নিয়ে ট্রাকে উঠেছি। বাস নেই, পিকআপে ভাড়া বেশি। এই গরমে সারা শরীর ভিজে গেছে, মাথা ঘুরছে।”
শিক্ষার্থী শাহিন আলম বলেন, “রবিবার ক্লাস শুরু। আজ বের হয়েছি, কিন্তু এই যানজট দেখে মনে হচ্ছে সময়মতো পৌঁছানো কঠিন।”
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুর রউফ বলেন, “ঈদের ছুটি শেষে রবিবার থেকে অফিস-আদালত খুলবে। কর্মস্থলে ফেরার জন্য মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। পাশাপাশি যমুনা সেতুর টোল আদায়ের ধীরগতি যানজট বাড়িয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।”