সংস্কার এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক দলের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

৪০

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দীর্ঘমেয়াদে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের আইনি কাঠামো তৈরির জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সংস্কার প্রক্রিয়া সঠিকভাবে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

- Advertisement -

- Advertisement -

তিনি রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে বলেন,‘সংস্কার যদি আমরা সঠিকভাবে করতে পারি, তাহলে বাঙালি জাতি হিসেবে যতদিন টিকে থাকবে ততদিন আপনাদের অবদান থেকে যাবে।’

শনিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আজ প্রথম সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা সভাপতিত্ব করেন।

প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যের শুরুতে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।

আজকের সংলাপের মাধ্যমে সরকারের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হলো উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আজ আমাদের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে। আপনারা দ্বিতীয় পর্বের স্রষ্টা। আপনারা সংস্কার সুপারিশগুলো জাতির সামনে নিয়ে আসবেন। আপনাদের সহযোগিতা করার জন্য কমিশনের সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন। আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করুন, যেন আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজে নেমে পড়তে পারি। নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার গঠিত হবে কেউ যেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে।’

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশগুলো সুবিবেচনা প্রসূত ইঙ্গিত করে ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘দেশের ঐক্য ও বিদেশের সমর্থন বিবেচনা করে সংস্কার কমিশন সুপারিশ নিয়ে এসেছে। এটি মূল্যবান সম্পদ। এই সম্পদ বাংলাদেশের ইতিহাসে রক্ষিত হবে। সবাই মিলে পরামর্শ দেন কোনগুলো বাস্তবায়ন করবো। নীতিমালা বানিয়ে দিলে স্বচ্ছভাবে দেশ চলতে থাকবে। কলকাঠি নাড়ানো ছাড়া যে একটা দেশ নিয়মের মধ্যে চলতে পারে, সেটাই আমাদের করতে হবে।’

সরকার সংস্কার প্রস্তাব চাপিয়ে দেবে না উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, এখান থেকে কতটুকু গ্রহণ করব, কীভাবে অগ্রসর হব- এর জন্য আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করা। এমন মজবুতভাবে আইনকানুন করব, যাতে সবাই মেনে চলে এবং মেনে চলার মাধ্যমে একটা সুন্দর সমাজ তৈরি করা যায়।

সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার বাস্তবায়ন করলে আন্তর্জাতিক মহল আমাদের অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করবে।

তিনি রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশে আরও বলেন, যে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকার সুযোগ পেয়েছিল, সেই কাঠামো থেকে যেন আমরা অন্যরূপে বেরিয়ে আসতে পারি। কী আইন প্রয়োজন হবে সেগুলো মাথায় রেখে সংস্কার কমিশন করা হয় এবং কমিশনে যারা ছিলেন,তারা তাদের কাজটি করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আমরা যদি আমাদের ঐক্যকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে পারি, তাহলে সেটি বংশ পরম্পরায় চলতে থাকবে। মসৃণভাবে সংলাপ চালিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, প্রতিজ্ঞা করি আমরা যেন গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি অসম্মান না জানাই। যে কারণে তারা আত্মত্যাগ করেছিল সেটা যেন পরবর্তী সব প্রজন্ম মনে রাখে, তাদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে, তাদের আত্মত্যাগকে সার্থক করার জন্য আমরা সবাই মিলে সবরকম চেষ্টা করব, তাদের সে স্বপ্ন যেন বাস্তবায়ন করতে পারি।