‘গাজা থেকে জরুরি ভিত্তিতে ১০ হাজার রোগী সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন’

18

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে জরুরি ভিত্তিতে ১০ হাজার রোগী সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাসচিব টেড্রোস আধানম ঘ্যাব্রিয়েসিস। আল জাজিরাতে শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।

- Advertisement -

- Advertisement -

জেনেভায় ডব্লিউএইচওর নির্বাহী বোর্ডের বিশেষ অধিবেশনে ঘ্যাব্রিয়েসিস জানিয়েছেন, জীবন রক্ষায় জরুরি চিকিৎসার জন্য এসব রোগীদের সরিয়ে নেওয়া অত্যাবশ্যক। তবে ইসরায়েলের অবরোধের কারণে সেই স্থানান্তর প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় তিনি গাজায় অবিলম্বে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর আহ্বান জানান।

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক হামলায় আহত হয়েছে বহু মানুষ, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। আল জাজিরা বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত হয়েছেন ২৯ জন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, সবমিলিয়ে চলমান ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত মোট ৫০ হাজার ৮৮৬ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৭৫ জন আহত হয়েছেন।

সরকারি গণমাধ্যম অফিস বলছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া হাজারো মানুষের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা এখনও অনিশ্চিত। তাদের অনেকেই হয়তো মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই হিসেবে মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ছাড়িয়েছে।

গাজায় গত মাস থেকেই অবরোধ দিয়ে রেখেছে ইসরায়েল। ফলে হাসপাতালগুলোতে ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও জ্বালানির ঘাটতি চরম আকার ধারণ করেছে।

অধিকাংশ ক্লিনিক ও হাসপাতাল বিদ্যুৎ সংকটে সেবা দিতে পারছে না। চালু থাকা হাসপাতালগুলোও আংশিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

চিকিৎসা সেবা বিপর্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি খাদ্য, পানি ও জ্বালানির সংকট গাজায় আরও তীব্র হয়েছে।

সোচ্চার হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফের চালানো হামলা ও অবরোধের তীব্র সমালোচনা করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তারা ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও যুদ্ধ আইন লঙ্ঘনের শামিল বলে উল্লেখ করেছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাঁখো সম্প্রতি দেওয়া এক বক্তব্যে জানিয়েছে, ফ্রান্স আগামী জুনে জাতিসংঘের অধিবেশনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

এই ঘোষণা এরই মধ্যে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। তারা একে ‘সন্ত্রাসবাদের পুরস্কার’ বলে উল্লেখ করেছে।

তবে মাঁখো বলেন, এই সিদ্ধান্তের লক্ষ্য হলো মধ্যপ্রাচ্যে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও টেকসই শান্তি নিশ্চিত করা।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে শুরু হওয়া এই সংঘাত ধারাবাহিকভাবে আরও তীব্র হয়েছে।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইসরায়েল গাজার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে স্থল অভিযান ও বোমাবর্ষণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ইসরায়েল বলছে, তারা হামাসকে নির্মূল করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কিন্তু এর মাশুল দিতে হচ্ছে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের।

গাজায় চলমান এই মানবিক সংকট ও সহিংসতা এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ ছাড়া এই বিপর্যয় থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।

You might also like