আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে ধৈর্য ধরতে বলল সরকার
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছে জানিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সবাইকে ধৈর্য ধরতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বৃহস্পতিবার রাতে যমুনার সামনে এই বিক্ষোভ শুরু হয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর ডাকে শুরু হওয়া এই অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী আন্দোলন এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় কর্মীরা।
সরকারের বিবৃবিতে বলা হয়, “সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে স্বৈরশাসন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে।”
“এ ব্যাপারে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ইতোমধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে, তাদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন সরকার বিবেচনায় রাখছে। সে পর্যন্ত সকলকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানাচ্ছে।”
বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধে কথা উল্লেখ করে বলা হয়, “ইতোমধ্যে সরকার জনদাবীর প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রচলিত আইনের অধীনে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে।”
“এছাড়া, সরকারের পক্ষে থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে সরকার ‘অবগত’ উলে্লখ করে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ফ্যাসিবাদী সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদের বিদেশ গমন সম্পর্কে জনমনে ক্ষোভ বিষয়ে সরকার অবগত। এ ঘটনার সাথে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা নিতে সরকার বদ্ধপরিকর রয়েছে।”
বুধবার রাতে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের পর থেকেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরব হয় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া বিভিন্ন পক্ষ।
হাসনাতের নেতৃত্বে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে বিক্ষোভে সংহতি প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টি, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলাম এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
রাত ১টার দিকে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি মিছিল যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেয়।
রাতে বিক্ষোভ শুরু হলে কাকরাইল মোড়, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ক্রসিং, মিন্টো রোডের মোড় থেকে পুলিশ যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ শুরু করে।
আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য যমুনার সামনে ব্যারিকেডের সামনে ও পেছনে সারিবদ্ধভাবে অবস্থান নেন। তবে ছোট ছোট মিছিলগুলোকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়।