বিশাল আকৃতি ও সুঠাম দেহের কালো মানিকের নাম ছড়িয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের গরুর হাটগুলোতে। কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে কালো মানিক নামের ষাঁড়টির দাম হাঁকা হচ্ছে ৭ লাখ টাকা। সিলেট নগরে আলাদা করে নজর কাড়ছে ‘বিগ বস’ ও ‘পুষ্পা’ নামের দুটি গরু। এবারের কোরবানির ঈদ উপলক্ষে কাজির বাজার পশুর হাটে শাহিওয়াল জাতের গরু দুটিকে আনা হয়। এমন সব নামি ও দামি গরুর কথা গনমাধ্যমে প্রচার হলেও এবারের গরুর হাটে পশুর চেয়ে ক্রেতা কম বলেই দেখা যাচ্ছে সারাদেশের গরুর হাট গুলোতে । রাজধানীর গাবতলিতে ১৫ লাখ টাকা গরুর দাম উঠলেও এক থেকে দুই লাখ টাকার মধ্যেই বেশি গরু বিক্রী হচ্ছে। চাহিদার থেকে সরবরাহ বেশি তাই ক্রেতারা এবার আছেন সুবিধাজনক অবস্থায় । তবে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালো নয় , তাই গরুর হাটের কেনাবেচা কতটা হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েই যাচ্ছে ।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বলছে এ বছর কোরবানিযোগ্য সর্বমোট ১ কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৭ টি গবাদিপশুর প্রাপ্যতা আশা করা যাচ্ছে। অন্যান্য বছরের ন্যায় এবছরও প্রায় ২০ লাখ ৬৮ হাজার ১৩৫ টি গবাদিপশুর উদ্বৃত্ত থাকবে বলে আশা করছে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয় মন্ত্রণালয়। গত বছর দেশে কোরবানিযোগ্য পশু ছিল ১ কোটি ২৯ লাখ; এর মধ্যে কোরবানি হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ। ২০২৪ সালে শুধু কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় উপলক্ষ্যে লেনদেন হয় ৬৯ হাজার ১শ ৪১ কোটি ১২ লক্ষ টাকা। এছাড়া গত বছর অনলাইন প্ল্যাটফরমে ৪ হাজার ৭ শ ৪০ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা মূল্যের পাচ লাখেরও বেশি গবাদিপশু বিক্রি হয়েছে।
রাজধানীর গরুর হাটগুলো জমজমাট । বিক্রেতারা বলছেন মাঝারি বা ছোট আকারের গরুর চাহিদাই বেশি । ঢাকার হাটগুলোতে বেশি কোরবানির পশু বিক্রী হলেও দেশের তিন বিভাগ থেকেই বেশি কোরবানীর পশুর সরবরাহ হয়ে থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রাজশাহীতে ৪৩ লাখ ৪৪ হাজার , চট্টগ্রামে ১৯ লাখ ৭৪ হাজার এবং খুলনা বিভাগে ১৪ লাখ ৩৪ হাজার গরু প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর । এই তিন বিভাগ মোট কোরবাণীর গরুর ৭০ ভাগ সরবরাহ করলেও এর মধ্যে ৩৫ ভাগই আসে রাজশাহী অঞ্চল থেকে।
এবারের কোরবানি মৌসুমে মধ্যম ও ছোট মাপের দেশি গরুর চাহিদাই বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে ক্রেতারা বলছেন, গরুর দাম অতিরিক্ত বেশি হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, গরুর খাবারের দাম বৃদ্ধির কারণে মূল্য কিছুটা বেড়েছে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিক্রেতারা রাজধানীর হাটগুলোতে পশু নিয়ে আসছেন। যদিও হাটের জন্য নির্ধারিত স্থান রয়েছে, তবুও আশপাশের সড়ক ও অলিগলিতে গরু রাখা হচ্ছে, যা সড়কজট এবং ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় এই মুহূর্তে ২১টি কোরবানির পশুর হাট বসেছে।তবে ক্রেতারা এখনো আছেন দেখা শোনা আর দরদাম যাচাইয়ে । অনেকেই আবার শেষ দিকেই গরু কিনতে চান, দাম কমে পাওয়া যাবে এই আশায় ।