এবার সিরীয় বাহিনীর ওপর ইসরায়েলের বিমান হামলা
সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সুয়েইদা শহরে দেশটির সরকারি বাহিনীর ওপর বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাতে বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় সিরীয় সেনা ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। তবে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা জানা যায়নি।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “দক্ষিণ সিরিয়ায় সাম্প্রতিক হামলার পূর্ণ দায়ভার ইসরায়েলের এবং এর ফলাফলও তাদেরই বহন করতে হবে।”
বাশার আল আসাদের সময় ইরানি স্থাপনা থাকার অযুহাতে সিরিয়াতে নিয়মিত বিমান হামলা চালাত ইসরায়েল। এতে দেশটির সরকারি বাহিনীর সদস্যরাও হতাহত হতো।
কিন্তু এবারের ইসরায়েলি হামলার ঘটনা এমন সময় ঘটল যখন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় তাদের সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়ে চেষ্টা চলছে।
তবে তেলআবিবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সিরিয়ার সংখ্যালঘু দ্রুজ সম্প্রদায়ের লোকদের রক্ষা করতেই হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, “সুয়েইদা অঞ্চলে যেসব বাহিনী ও অস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছিল, সেগুলোর ওপর আমি হামলার নির্দেশ দিয়েছি, কারণ সরকার তা দ্রুজদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছিল।”
শহরটিতে দুই দিন ধরে দ্রুজ মিলিশিয়া ও বেদুইন গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ভয়াবহ জাতিগত সংঘর্ষে অন্তত ২০০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস ।
এর প্রেক্ষিতে প্রথমবারের মতো সিরীয় সরকারি বাহিনী সুয়েইদা শহরে প্রবেশ করে, যেটি এতদিন মূলত দ্রুজ মিলিশিয়াদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
তবে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, “সিরীয় সেনারা অন্তত ১৯ জন ড্রুজ বেসামরিক নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করেছে, যাদের মধ্যে ১২ জন একটি পারিবারিক গেস্ট হাউজে নিহত হন।”
এর দাবির সপক্ষে তারা কোনো প্রমাণ সরবরাহ করেনি।
সংস্থাটি আরও জানায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদস্যরা বেসামরিক ঘরবাড়িতে লুটপাট চালিয়েছে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন ধরিয়েছে। রয়টার্স জানায়, সামরিক পোশাকধারীরা ঘরবাড়ি ও দোকানে আগুন দিচ্ছে এবং লুটপাট করছে।
বিবিসি আরবি-কে সুয়েইদার এক বাসিন্দা বলেন, “পরিস্থিতি ভয়াবহ। এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণের মধ্যে মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামাঞ্চলের দিকে পালাচ্ছে, যদিও কারফিউ জারি রয়েছে।”
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ইসলামপন্থি বিদ্রোহীরা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর দ্রুজ সম্প্রদায় অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার প্রশাসনের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে আসছিল।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এক্সিওস জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন ইসরায়েলকে অনুরোধ করেছে যেন তারা সিরীয় বাহিনীর ওপর হামলা বন্ধ করে। ইসরায়েল মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে হামলা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দেয়।