তবে কি স্থায়ী ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলো বিএনপি-জামায়াতের। এতদিন যারা ছিলেন একসঙ্গে তারা এখন পরস্পরের সমাবেশেও আমন্ত্রণ পাচ্ছেন না। গত কিছুদিন থেকেই বিএনপির সাথে দূরত্ব বাড়ছিল জামায়াতে ইসলামীর। এবার তা চূড়ান্ত হলো জামায়াতে ইসলামীর ” জাতীয় সমাবেশ ” উপলক্ষে।
শনিবারের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জাতীয় সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদসহ ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী’ দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছ জামায়াতে ইসলামী। তবে আমন্ত্রণ করেনি ২৪ বছরের জোটসঙ্গী বিএনপিকে। পিআরের পক্ষে থাকার পরও দলত্যাগী জামায়াতের সাবেক নেতাদের দল এবি পার্টিকেও আমন্ত্রণ করেনি তারা।
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের গনমাধ্যমকে জানান, পিআরের পক্ষে থাকা দলগুলোকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে।
সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশে বিএনপিকে আমন্ত্রণ না করার কারণ সম্পর্কে জামায়াতের আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেছেন, সমাবেশ করা হচ্ছে আনুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর) নির্বাচনের দাবিতে। বিএনপি পিআরের ঘোরবিরোধী। তাই আমন্ত্রণ করা হয়নি। আমন্ত্রণ করলে দুই দলকে বিব্রত হতে হতো।
একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত- এ অবস্থানের কারণে জামায়াত থেকে ২০১৯ সালে বহিষ্কার করা হয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জুকে। পরের বছর তিনি এবি পার্টি গঠন করেন। জামায়াত, শিবিরের অনেকেই যোগ দিয়েছেন এ দলে।
এবি পার্টিও পিআর চায়। তারপরও সমাবেশে আমন্ত্রণ না করার কারণ সম্পর্কে জামায়াতের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেছেন, মজিবুর রহমান মঞ্জুর প্রতি নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ, কারণ তিনি নিয়মিত জামায়াতের সমালোচনা করেন। তিনি সমাবেশে বক্তৃতা করলে কর্মীরা প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন। এ ঝুঁকির কারণে আমন্ত্রণ করা হয়নি এবি পার্টিকে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সাল থেকে পরের দুই যুগ একজোট ছিল বিএনপি ও জামায়াত। একসঙ্গে সরকার পরিচালনা করে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সমঝোতার ভিত্তিতে জোট ভাঙে দুই দল। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর বিএনপির যুগপৎ আন্দোলন থেকেও সরে যায় জামায়াত। জুলাই অভ্যুত্থানে দল দুটি অংশ নিলেও ৫ আগস্টের পর বিএনপির প্রধান নির্বাচনী প্রতিযোগী হওয়ার চেষ্টা করছে জামায়াত। তবে দুই দলের নেতারা একে অপরের কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন।
সমকালের সৌজন্যে