ঈদযাত্রায় সড়কে ডাকাতি, ছিনতাই, দুর্ঘটনা ও যানজট রোধে জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সোমবার সকালে নগরীর, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ক্র্যাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির আয়োজিত আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
“ঈদযাত্রায় সড়কে ডাকাতি, নগর জুড়ে ছিনতাই, সড়ক দুর্ঘটনার শঙ্কা উত্তোরণের উপায়” শীর্ষক এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সড়কে বাড়তি চাপ ও ফিটনেসবিহীন সিটিবাসে কারখানা শ্রমিকদের যাত্রা বন্ধে কলকারখানা ও পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস ২৪ মার্চের মধ্যে পরিশোধ করে ধাপে ধাপে বাড়ি পাঠানোর পরামর্শ দেন মোজাম্মেল হক।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব চৌধুরী বলেন, এবারের ঈদে ঢাকা ও আশেপাশের জেলা থেকে প্রায় দেড় কোটি মানুষ নিজ নিজ গন্তব্যে যাত্রা করবেন। দেশের এক জেলা থেকে অপর জেলায় আরও ৩ থেকে সাড়ে ৩ কোটি মানুষের যাতায়াত হতে পারে। এর ৭৫ শতাংশ সড়কপথে, ১৭ শতাংশ নৌপথে এবং ৮ শতাংশ রেলপথে যাতায়াত হবে। পথে পথে যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করা, সড়কে ডাকাতি, ছিনতাই ও দুর্ঘটনা রোধে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তাই দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মালিক সমিতি, শ্রমিক ফেডারেশন, পুলিশ ও বিআরটিএ’র হস্তক্ষেপ চায় সংগঠনটি।
মোজাম্মেল হক বলেন, ৮৩ শতাংশ কোচ ও ৬০ শতাংশ লোকোমোটিভ মেয়াদোত্তীর্ণ এবং ৮২ শতাংশ রেলক্রসিং অরক্ষিত। এমন পরিস্থিতিতে রেল দুর্ঘটনা ও লাইনচ্যুতি রোধ এবং টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করে হয়রানিমুক্ত রেলসেবা প্রদানের দাবি জানান বক্তারা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. সাইফুল আলম বলেন, সরকারের পরিকল্পনার গলদে নানান অব্যবস্থাপনায় যাত্রী দুর্ভোগ ও সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। এর দায় অন্যায়ভাবে মালিকদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এবারের ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে মালিক সমিতি কঠোর হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আবদুর রহিম বক্স দুদু বলেন, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহন নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিতে হবে। এবারের ঈদযাত্রায় শ্রমিক ফেডারেশন যাত্রীসাধারনের পাশে থাকবে, যেকোনো অভিযোগের বিষয়ে সাথে সাথে আমলে নেবে।
বিআরটিএ’র পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ফিটনেসবিহীন যানবাহন বন্ধে বিআরটিএ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে ৬৪ জেলায় ভিজিলেন্স টিম তৎপরতা চালাবে। যাত্রী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ভিজিলেন্স টিমে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সীমিত সামর্থ্য নিয়ে বিআরটিএ প্রাণপন চেষ্টা চালাবে।
হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি অপারেশন মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ৩৯০০ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়কে ৩৪০টি অপারেশন টিম কাজ করছে। ঈদে যাত্রাপথে হাইওয়ে পুলিশের হটলাইন নম্বর সাথে রাখুন। আমাদের কল করার ১৫ মিনিটের মধ্যে সাড়া মিলবে। তিনি প্রবাসীদের ঈদে লাগেজ-ব্যাগেজ নিয়ে বাড়ি যেতে হাইওয়ে পুলিশের সেবা নেওয়ার আহ্বান জানান।
এছাড়া ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় যানবাহন চলাচল বন্ধ, রুটভিত্তিক গতি নির্ধারণ, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধসহ বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়।