আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ৯ মাস পর দেশ ছেড়ে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড গেলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
বুধবার গভীর রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে থাই এয়ারওয়েজের টিজি ৩৪০ নম্বর ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন তিনি।
তিনি বলেন, চিকিৎসার জন্য বুধবার রাতে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন আবদুল হামিদ।
বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানায়, থাইল্যান্ড যাওয়ার জন্য রাত ১১টার দিকে বিমানবন্দরে পৌঁছান আবদুল হামিদ। এরপর ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে দেশত্যাগের অনুমতি পান।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জুনের প্রথম সপ্তাহে ফিরতি টিকিটও কেটেছেন তিনি। তার সঙ্গে ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ তুষার এবং শ্যালক নওশাদ খানও ছিলেন।
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। সেদিন ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এছাড়া দলটির অনেক নেতাও বিদেশে পাড়ি জমান। যারা দেশ ছাড়তে পারেননি তাদের অনেকে দেশেই গা ঢাকা দেন। এর মধ্যে অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। আবার অনেকে এখনো আত্মগোপনে আছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কোথায় ছিলেন সে খোঁজ পাওয়া যায়নি। বুধবার রাতে দেশ ছাড়ার পর তার বিষয়টি স্পষ্ট হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা হয়। গত ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি করা হয়।
সেই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ওবায়দুল কাদেরকেও আসামি করা হয়।
মামলা থাকার পরও আবদুল হামিদকে কেন দেশত্যাগের অনুমতি দেওয়া হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, আবদুল হামিদের দেশত্যাগের বিষয়ে আদালতের কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না। তাই তার বিদেশযাত্রায় বাধা দেওয়া হয়নি।
প্রবীণ রাজনীতিক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ২০ ও ২১তম রাষ্ট্রপতি ছিলেন। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সবেচেয় বেশি সময় রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
তিনি সপ্তম জাতীয় সংসদে ডেপুটি স্পিকার হিসেবে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এবং ২০০১ সালের জুলাই থেকে ২০০১ সালের ৮ অক্টোবর পর্যন্ত স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন।
নবম জাতীয় সংসদের স্পিকার হিসাবে ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের অসুস্থতাজনিত কারণে তার মৃত্যুর ৬ দিন আগেই ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ তিনি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পান।
আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল প্রথম দফায় দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। এরপর তিনি ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। মেয়াদ শেষে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন। বঙ্গভবন ছাড়ার পর আবদুল হামিদ রাজধানীর নিকুঞ্জে তার বাসায় উঠেছিলেন।