সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশ ছাড়ার ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার ও দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
আবদুল হামিদের দেশত্যাগের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের শাস্তি দিতে না পারলে নিজের পদ ছেড়ে দেবেন- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর এমন বক্তব্য আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এ ব্যবস্থা নেওয়া হলো।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ইমিগ্রেশন পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার ও মো. আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জের সদর থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং এসবির একজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো আরেক বার্তায় বলা হয়, ওই ঘটনায় অতিরিক্ত আইজি (প্রশাসন) মো. মতিউর রহমান শেখকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই ঘটনায় কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আগের রাতে আবদুল হামিদ ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে চিকিৎসার জন্য ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন।
সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী এই যাত্রায় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ ও শ্যালক নওশাদ খান।
আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বঙ্গভবন ছাড়ার দিন তিনি রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার কথা বলেন। তবে প্রবণ গণ-আন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার পর তাকে দলের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে সামাজিক মাধ্যম গুঞ্জন উঠে, যদিও সেটি পরে সত্য প্রমাণ হয়নি।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর হামিদের নিজ জেলা কিশোরগঞ্জ শহরের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়, মিঠামইনে নিজের এলাকাতে তার ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়, সবশেষ গত ১৪ জানুয়ারি আন্দোলনের সময় হামলার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আসামি হয়েছেন হামিদের বড় ছেলে ও কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক ও মেজ ছেলে রাসেল আহমেদ তুহিনও।
এই অবস্থায় হামিদের দেশ ছাড়ার বিষয়টি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক-পার্টি এনসিপির নেতারা সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ ঝাড়ছেন। দলটির অন্যতম শীর্ষ নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ এমনও লিখেছেন যে, যারা আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের পক্ষে থাকবে না, তারাও তাদের সঙ্গে থাকবেন না।
বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে কাছে পেয়ে বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দিনাজপুরের নেতাকর্মীরাও।
তিনি যখন ডিসি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন, তখন কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে হামিদের বিদেশযাত্রা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে থাকে ‘বৈষম্যবিরোধী’ ছাত্ররা।
উপদেষ্টা আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, “সাবেক রাষ্ট্রপতি দেশত্যাগের সাথে জড়িত কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতায় না নিয়ে আসতে পারলে আমি চলে যাব।”
তিনি বলেন, “যারা এই ঘটনা জড়িত তাদের বিষয়ে তদন্ত করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসব। এটা নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া যাবে না।”
You might also like

সম্পাদক :মোঃ শাহজালাল
২০২৫ © ব্যানারনিউজবিডি কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
🚧 এই সাইটটি বর্তমানে নির্মাণাধীন 🚧
২০২৫ © ব্যানারনিউজবিডি কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
🚧 এই সাইটটি বর্তমানে নির্মাণাধীন 🚧
You cannot print contents of this website.