ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে সেনাপ্রধান

10

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ‘যত দ্রুত সম্ভব’ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ডিসেম্বরকে তিনি সম্ভাব্য সময়সীমা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
‍বুধবার (২১ মে) ঢাকার সেনাপ্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এরকম মত প্রকাশ করেন বলে বৈঠক সংশ্লিষ্ট সূত্রে বরাত দিয়েছে খবর দিয়েছে টাইমস অব বাংলাদেশ।
সভায় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় নিয়োজিতরা ছাড়া ঢাকায় অবস্থানরত সকল সেনা কর্মকর্তা সরাসরি উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্য সেনানিবাসে থাকা কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে থাকা কর্মকর্তারাও এতে অংশ নেন।
সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে শুরু হওয়া বৈঠকে প্রায় ৩০ মিনিটের সূচনা বক্তব্যে জেনারেল ওয়াকার সশস্ত্র বাহিনীর নিরলস সেবা ও জাতীয় স্থিতিশীলতায় অবদানের প্রশংসা করেন। তবে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, গত ৫ আগস্ট থেকে সেনাবাহিনীর নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কিছু মহল তার ও বাহিনীর বিরুদ্ধে অযৌক্তিকভাবে অভিযোগ তুলছে।
বৈঠকে যোগ দেওয়া এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, ‘তিনি (সেনাপ্রধান) সতর্ক করেন যে দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী সংকটকে উসকে দিচ্ছে এবং পরিস্থিতিকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে।’
জেনারেল ওয়াকার আরও বলেন, রাখাইনের জন্য প্রস্তাবিত মানবিক করিডোর নিয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত একটি নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই নিতে হবে এবং তা বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে হতে হবে।
তিনি দৃঢ়ভাবে জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনোই জাতীয় সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী কোনো পদক্ষেপ নেবে না এবং কাউকে তা নিতে দেবে না।
সেনাবাহিনীর সকল সদস্যকে নিরপেক্ষ থেকে সততার সঙ্গে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন সেনাপ্রধান।
তবে তিনি এ বলেও সতর্ক করেন, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্বে সেনা মোতায়েন দীর্ঘায়িত হলে প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
‘যত দ্রুত রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করবে, সেনাবাহিনী তত আগে ব্যারাকে ফিরে যেতে পারবে। না হলে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যে দেশের প্রতিরক্ষা ঝুঁকির মুখে পড়বে,’ বলে মন্তব্য করেন  তিনি।
জেনারেল ওয়াকার সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের শৃঙ্খলা ও আনুগত্য বজায় রাখার পাশাপাশি নিপীড়িতদের অধিকার রক্ষা করার আহ্বান জানান।
বক্তব্যের পর এক ঘণ্টাব্যাপী প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন সেনাপ্রধান।
এক কর্মকর্তা প্রস্তাব করেন, বরখাস্ত সেনাসদস্যদের অপরাধগুলো আইএসপিআরের মাধ্যমে জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক। জবাবে জেনারেল ওয়াকার বলেন, ইসলামি মূল্যবোধে ব্যক্তিগত অপরাধ প্রকাশ করাকে নিরুৎসাহিত করা হয়।
তবে তিনি বলেন, কোনো অপরাধ সীমা অতিক্রম করলে তা প্রকাশ করা প্রয়োজন হয়ে উঠতে পারে।
অনুষ্ঠানে কর্মকর্তারা মব সংস্কৃতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, জুলাই–আগস্টের হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘের অনুসন্ধান প্রতিবেদন, নিজেদের প্রশিক্ষণ, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম এবং চট্টগ্রাম বন্দর ঘিরে কৌশলগত বিষয়ে প্রশ্ন করেন।

- Advertisement -

- Advertisement -

You might also like