আবদুল হামিদকে গ্রেপ্তার না করার কারণ জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

2

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা না থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

- Advertisement -

- Advertisement -

সোমবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এ ঘটনার তদন্ত চলছে। সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলেই গ্রেপ্তারের বিষয়টি আসবে।”

তিনি বলেন, “কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়, সে কারণে যাচাই-বাছাই শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মামলার পর যাচাই-বাছাইয়ের এই কার্যক্রম দেশের সব নাগরিকের জন্যই প্রযোজ্য।”

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তিন সদস্যের কমিটি বিষয়টি দেখভাল করছে।

গত ৭ মে গভীর রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশ ছেড়েছিলেন আবদুল হামিদ। এরপর অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা শুরু হয়, কেননা কিশোরগঞ্জের একটি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সংক্রান্ত মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতির নাম ছিল আসামিদের তালিকায়।

ওই ঘটনার পর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারসহ চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় সবচেয়ে জোরালো প্রতিবাদ আসে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে। দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, “খুনিকে দেশ থেকে নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, পুলিশ আসামি ধরলেও আদালত থেকে জামিন দেওয়া হয়।”

আরও পড়ুন: চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলেন আবদুল হামিদ

তিনি প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনের সামনেও অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেন। পরে এনসিপির দাবির মুখে অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে।

আবদুল হামিদের দেশত্যাগ নিয়ে আলোচনা চলাকালে তার ছেলে রিয়াদ আহমেদ তুষার ১৪ মে ফেসবুকে এক পোস্টে লেখেন, “৮২-৮৩ বৎসরের একজন বয়স্ক লোক, যিনি কিনা অসুস্থতার কারণে এখন ২ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেন না, ২ ঘণ্টা বসে থাকতে পারছেন না; বাধ্য হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়েন।

“ওজন কমতে কমতে ৫৪ কেজিতে দাঁড়িয়েছে; যে কারণে নিজের কোনো প্যান্ট পরতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে লুঙ্গি পরে থাকতে হচ্ছে। যাকে বেটার চিকিৎসার জন্য ডাক্তারগণ বোর্ড করে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বিদেশে চিকিৎসা করানোর জন্য।”

সব বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে এক মাস পর চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরেন আবদুল হামিদ। রবিবার গভীর রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।

বিমানবন্দরে তাকে হুইলচেয়ারে করে নামানো হয়। তখন তার পরনে ছিল লুঙ্গি ও নীল রঙের একটি চাদর। সঙ্গে ছিলেন তার শ্যালক নওশাদ খান এবং ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ তুষার।

আবদুল হামিদ আওয়ামী লীগ সরকারের সময় জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও পরে স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার মেয়াদ শেষ হয় ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল। এরপর থেকে তিনি রাজধানীর নিকুঞ্জে নিজ বাসায় বসবাস করছেন।

You might also like