বিবাহিত ছেলে তার ‘প্রেমিকা’ নিয়ে উড়োজাহাজে চড়েছেন জানতে পেরে সেই ভ্রমণ আটকাতে ঢাকা-কাঠমান্ডু ফ্লাইটে ‘বোমা থাকার’ উড়ো খবর দিয়েছিলেন তার মা।
উড্ডয়নের ঠিক আগ মুহূর্তে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নেপালগামী উড়োজাহাজটি থামানোর কারণ নিয়ে এই তথ্য দিয়েছে র্যাব।
শনিবার কারওয়ান বাজারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান বলেছেন, এই ঘটনায় ‘প্রেমিকা’ নিয়ে নেপালে চলে যাওয়া কামরুজ্জামান ইমন নামের ওই ব্যক্তির মা, স্ত্রীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি এক ব্যক্তি তার পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে ওই ফ্লাইটে করে কাঠমান্ডু যাচ্ছিলেন। সে বিষয়টি তার স্ত্রী ও মা জানতে পারে। পরে ওই ব্যক্তির এক বন্ধুর থেকে তথ্য নিয়ে ওই মা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ফোন করে বিমানে বোমা আছে এমন ভুয়া সংবাদ দেন।”
ছেলে যেন পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে কাঠমান্ডু যেতে না পারে এ জন্য এই পরিকল্পনা করেন বলে ভাষ্য র্যাব মহাপরিচালকের।
ভেতরে ‘বোমা’ থাকার উড়ো খবরে উড্ডয়নের ঠিক আগ মুহূর্তে নেপালগামী বিমানের উড়োজাহাজটি থামানো হয়। শুক্রবার বিকালে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ওই ঘটনার পর বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটিতে বোমার খোঁজে তিন ঘণ্টাব্যাপী তল্লাশি চালানো হয়।
বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম রওশন কবীর বলেন, ফ্লাইটটির পৌনে ৫টায় ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী যাত্রী উঠিয়ে উড়োজাহাজটি ট্যাক্সি (রানওয়ের পথে যাত্রা) করছিল।
“উড্ডয়নের আগ মুহূর্তে কন্ট্রোল টাওয়ারে একটি বেনামি ফোন আসে। বলা হয়, ফ্লাইটে একটি বোমা ওঠানো হয়েছে। এরপর দ্রুত উড়োজাহাজটির উড্ডয়ন বাতিল করা হয়।”
তিনি বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সবার আগে তাদের উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে স্ক্রিনিং শেষে লাউঞ্জে স্থানান্তর করা হয়। বিমান বন্দরের বম ডিসপোজাল ইউনিট দ্রুত সেখানে গিয়ে তল্লাশি শুরু করে। তবে কিছু পাওয়া যায়নি।
নিরাপত্তা তল্লাশি শেষে উড়োজাহাজটি রাতে যাত্রী নিয়ে নেপালের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়ে যায়।
এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তারে কথা জানিয়ে র্যাব মহাপরিচালক শহিদুর রহমান বলেছেন, বিমানে কিছু না পাওয়ার পর যে নম্বর থেকে ফোন করা হয়েছিল তার অবস্থান শনাক্ত করা হয়।
তারপর মধ্য দক্ষিণ খান এলাকায় একটি বাসায় সেনাবাহিনী ও র্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে নেপালে চলে যাওয়া ইমনের মা রাশেদা বেগম, তার স্ত্রী তাহমিনা স্ত্রী (২৮) এবং ইমরান নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তারা বর্তমানে র্যাবের হেফাজতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন মহাপরিচালক।
ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি গত এক বছরে র্যাবের অভিযান, গ্রেপ্তার, অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।