গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির সমাবেশে হামলার পর উদ্ভুত পরিস্থিতি আরোপ করা কারফিউয়ের মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার বিকালে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়, শুক্রবার সকাল ১১টা পর্যন্ত কারফিউ অব্যাহত থাকবে।
এরপর দুপুর ২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার জন্য কারফিউ বন্ধ থাকবে। দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কারফিউ চলবে।
বুধবার এনসিপির মার্চ ফর গোপালগঞ্জ কর্মসূচিকে ঘিরে জেলা শহরটিতে তুলকালাম ঘটে যায়। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী সমর্থকরা জনসভাস্থলে হামলা করে। জনসভা মঞ্চ, এনসিপির গাড়িবহর, এবং তাদের নেতাকর্মীদের ওপর এই হামলার মধ্যে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গেও সংঘর্ষে জড়ায় হামলাকারীরা।
এনসিপির সমাবেশ শেষে শহরের সমাবেশস্থল থেকে বের হওয়ার পথে কেন্দ্রীয় নেতাদের বহনকারী গাড়িবহরের ওপর ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।
চারদিক থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন এনসিপির নেতাকর্মীরা। পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাবের গাড়িও আটকে দেওয়া হয়।
পরে ঘটনাস্থল থেকে এনসিপির শীর্ষ নেতাদের সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া গাড়িতে করে উদ্ধার করে খুলনায় পাঠানো হয়।
দিনভর সহিংসতায় চারজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন, যাদের মধ্যে কয়েকজন সাংবাদিকও রয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গোপালগঞ্জের ডিসি মো. কামরুজ্জামান জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে সরকার রাত ৮টা থেকে ২২ ঘণ্টার জন্য কারফিউ আরোপ করে।
এরপর বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত অভিযানে ২০ জনকে আটকের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কারফিউয়ের মধ্যে ছোট্ট এই জেলা শহরটিতে থমথমে পরিস্থিতির খবর আসছে সংবাদ মাধ্যমে। এখন পর্যন্ত শহরের সব দোকান-পাট বন্ধ। দুয়েকটা একটা রিকশা চলছে। রাস্তায় সেভাবে কাউকে দেখা যাচ্ছে না।
কারফিউ আরোপের পর স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে শহরবাসীকে অতি জরুরি প্রয়োজন না হলে বাড়ি থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দেন।
তিনি ফেসবুকে লেখেন, “গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করা হয়েছে। জীবন-মৃত্যুর মতো পরিস্থিতি না হলে সাধারণ জনগণ কেউ ঘর থেকে বের হবেন না।”
সব ধরনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে আসিফ লেখেন, “নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের *** ভেঙে দেওয়া হবে।”