দেশে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে যখন দেশে সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে, তখন ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
কেন এই সিদ্ধান্ত তার ব্যাখ্যায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেছেন, এগুলোতে কারিগরি সহযোগিতা দেওয়া সম্ভব নয়।
রবিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সংবাদকর্মীদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “অনুমোদিত অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে অনেকগুলো অবাস্তবায়নযোগ্য এবং অনেকগুলোর পর্যাপ্ত লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়া সম্ভব হবে না।”
ঢাকায় সদ্য সমাপ্ত ৪ দিনের বিনিয়োগ সম্মেলন থেকে প্রাপ্তি জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
একই দিন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার সংবাদকর্মীদেরকে ১০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিলের সিদ্ধান্ত জানান, যে অঞ্চলগুলো ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।
আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশে মোট ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার হাতে নিয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বা বেজা প্রতিষ্ঠা করেছিল। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোকে বিদেশি বিনিয়োগ ও বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান হবে, এমন কথাও বলেছিল সরকার।
তবে ২০১০ সালে বেজা প্রতিষ্ঠার পর এখন পর্যন্ত খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি। আর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে কেবল ১০টি অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করবে বলে সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম।
এর মধ্যে বেজার পাশাপাশি বাংলাদেশ ইকোমিক প্রসেসিং জোন-বেপজার অষ্টম বোর্ড সভায় ১০টি অঞ্চলের অনুমোদন বাতিল করা হয়।
বিগত সরকারের আমলে অনুমোদন দেওয়া ৯৭ টি অঞ্চলকে কীভাবে কীভাবে কার্যকর করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করতে রবিবার এই বোর্ড সভা বসে; সিদ্ধান্ত হয় সরকারিভাবে পরিকল্পিত কক্সবাজারের সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক, বাগেরহাটের সুন্দরবন ট্যুরিজম পার্ক, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল, গাজীপুরের শ্রীপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ময়মনসিংহ অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে আর আগাবে না সরকার।
বেসরকারিভাবে মুন্সীগঞ্জে বিজিএমইএর গার্মেন্টস শিল্প পার্ক, সুনামগঞ্জের ছাতক ইকোনমিক জোন, বাগেরহাটের ফমকম ইকোনমিক জোন, ঢাকার সিটি স্পেশাল ইকোনমিক জোন ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়েও আর আগানো হবে না।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, “এ সংখ্যা আরও বাড়তে বা কমতে পারে।”
নেপালকে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, “এজন্য প্রধান উপদেষ্টা জায়গা খুজতে বলেছেন।”
বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল বিষয়ে ভারত যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সে বিষয়ে সংবাদকর্মীরা প্রশ্ন রাখেন আশিকের কাছে।
জবাবে তিনি বলেন, “ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলকে সরকার একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে। কারণ, ট্রান্সশিপমেন্টের কারণে একটি বড় অঙ্ক চার্জ হিসেবে অন্য দেশকে দিতে হতো, সেটি আর দিতে হবে না। এর ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোকে আধুনিকীকরণের সুযোগ তৈরি হবে।”
এরই মধ্যে সরকার ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট এবং সৈয়দপুর বিমান বন্দরে কার্গো হ্যান্ডেলিং সক্ষমতা বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মলনে।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, “এতে যে পরিমাণ বিনিয়োগ দরকার সরকার তা করতে প্রস্তুত আছে। কার্গো হ্যান্ডেলিং অবশ্যই প্রতিযোগিতামূলক হবে।”
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে সমুদ্রবন্দর বা বে-টার্মিনাল স্থাপনের জন্য বিদেশি কোম্পানি চূড়ান্ত করা হবে বলেও জানান আশিক।
তিনি বলেন বলেন, “ওয়ান স্টপ সার্ভিসের সব কার্যক্রম অনলাইনে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভবিষ্যতে একটি ওয়েবসাইট থেকেই সব ধরনের লাইসেন্স ও অনুমোদন দেওয়া হবে।”
You might also like

সম্পাদক :মোঃ শাহজালাল
২০২৫ © ব্যানারনিউজবিডি কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
🚧 এই সাইটটি বর্তমানে নির্মাণাধীন 🚧
২০২৫ © ব্যানারনিউজবিডি কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
🚧 এই সাইটটি বর্তমানে নির্মাণাধীন 🚧
You cannot print contents of this website.