মাত্র সাত মাসের কার্যক্রমে ১৮৭৪ কোটি টাকার কর ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নতুন ‘আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট’। এর মধ্যে ৬৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১১৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা আদায় করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা হয়েছে।
সোমবার এনবিআরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নবগঠিত এই ইউনিটের সফলতার এ চিত্র তুলে ধরা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনবল ও সরঞ্জাম স্বল্পতার মতো নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে কার্যক্রম শুরুর পর গত সাত মাসে গোয়েন্দা কার্যক্রমের ভিত্তিতে ১৮৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কর ফাঁকির প্রাথমিক তদন্তে এই বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি উদঘাটন করে ইউনিটটি।
এর মধ্যে ৬৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ২৩১টি এ-চালানের মাধ্যমে ১১৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানায় এনবিআর।
কর ফাঁকির সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব সাময়িকভাবে জব্দ করার কথাও জানানো হয়েছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
এনবিআর বলছে, “আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট করদাতাদের স্বেচ্ছায় সঠিক কর প্রদানে উৎসাহিত করছে এবং একইভাবে কর ফাঁকিবাজ ও অর্থ পাচারকারীদের প্রতি স্পষ্ট বার্তা প্রদান করছে। যেকোনো ধরণের করফাঁকি ও বেনামি সম্পদ অর্জনের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট বদ্ধ পরিকর।”
প্রতিষ্ঠার অল্প সময়ের মধ্যেই ইউনিটটির এই সাফল্যকে উল্লেখযোগ্য হিসেবে বর্ণনা করে এনবিআর বলেছে, “নবগঠিত সংস্থা হিসেবে এ ইউনিটের জনবল ও লজিস্টিকজনিত বহুবিধ সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই হৃত রাজস্ব পুনরুদ্ধারসহ গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে কর ফাঁকি উদঘাটন করে আইনানুগ ও ন্যায্য রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করতে অনুকরণীয় ও বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে চলেছে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠান।”
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, এই ইউনিটের ক্রমবর্ধমান সক্ষমতা, প্রযুক্তিনির্ভরতা এবং দক্ষ মানবসম্পদ ভবিষ্যতে বাংলাদেশের শক্তিশালী রাজস্ব কাঠামো বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
কর আদায়ে ন্যায্যতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করা সম্ভব বলেও মনে করে এনবিআর।