অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফের হামলায় পাঁচ শতাধিক ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে।
গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত জরুরি বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসালের বরাতে শনিবার এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
উপত্যকাটির দেইর এল–বালাহ থেকে আল জাজিরার প্রতিনিধি হিন্দ খৌদারি জানিয়েছেন, শনিবার সকালেও এক নবজাতক শিশুর পরিবারকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। খুবই সংকটজনক অবস্থায় থাকায় শিশুটির হাতও কেটে ফেলেন চিকিৎসকরা। এরপরেও তাকে বাঁচানো যায়নি।
এদিকে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর গাজায় বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্য করে চালানো হামলার সংখ্যা বাড়ছে।
প্রতি ছয় ইসরায়েলি হামলার একটিতে কেবল নারী ও শিশুকেই লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এমনকি আল–মাওয়াসির মতো এলাকাগুলোকে ইসরায়েল নিজেই নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করার পরেও সেখানে ২৩টি হামলা চালানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, সবমিলিয়ে চলমান ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত মোট ৫০ হাজার ৮৮৬ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৭৫ জন আহত হয়েছেন।
সরকারি গণমাধ্যম অফিস বলছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া হাজারো মানুষের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা এখনও অনিশ্চিত। তাদের অনেকেই হয়তো মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই হিসেবে মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ছাড়িয়েছে।
জাতিসংঘ আরও জানিয়েছে, গাজার পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীরেও ইসরায়েলি সেনাদের হামলার সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৫ মার্চ থেকে ৭ই এপ্রিল পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী ২ শিশুসহ ৯ জনকে হত্যা করেছে। তাদের হামলায় ৩৪ শিশুসহ কমপক্ষে ১৩০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ক অফিস অসিএইচএ জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনাদের দিকে পাথর ছোড়ার অভিযোগে এক নারীকে গুলি করে হত্যা করেছে।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর সামরিক হামলার পাশাপাশি অবৈধ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরাও ফিলিস্তিনিদের উপর ৪৪টি হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ৫ শিশুসহ ২৫ জন আহত হয়েছেন।
একই সময়ে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম জুড়ে ইসরায়েলি মালিকানাধীন ১০৫টি স্থাপনা ভেঙে ফেলেছে। ফলে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১২২ ফিলিস্তিনি।