অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং মাহফুজ আলমকে সব দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, যাকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর জন্য আন্দোলন করছেন সমর্থকরা।
বুধবার এক ফেইসবুক পোস্টে ইশরাক লিখেছেন, “গণতান্ত্রিক ভাষায়, রাজনৈতিক শিষ্টাচার মেনে যৌক্তিক কারণে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সকল দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি।”
আদালতের রায়ে নির্বাচন কমিশন ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করলেও কয়েকটি জটিলতার কথা বলে তার শপথ অনুষ্ঠান ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাকে মেয়র পদে বসানোর দাবিতে গত এক সপ্তাহ ধরে নগর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন সমর্থকরা।
এ অবস্থায় নগর ভবন কার্যত অচল। নগর ভবনে থাকা স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ও বন্ধ। আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ওই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। আদালতের সিদ্ধান্ত আসার আগে ইশরাকের সমর্থকদের ‘জনদুর্ভোগ’ সৃষ্টি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছিল মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে।
এখন আসিফ মাহমুদ এবং জুলাই অভ্যুত্থানে তার সহযোদ্ধা, তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি করে ইশরাক লিখেছেন, “যেহেতু এটা প্রতীয়মান যে আপনারা রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত আছেন, হয়তো আগামীতে সরাসরি যুক্ত হবেন। এবং এটাও অনেকটা স্পষ্ট আপনারা নির্বাচন করবেন। তাহলে আপনাদের পদত্যাগের দাবি কি অযৌক্তিক? নাকি এটাই সঠিক পদক্ষেপ হবে এবং আপনাদের নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের অবসান ঘটবে।”
এক্ষেত্রে সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজকে তাদের আরেক সহযোদ্ধা নাহিদ ইসলামের দৃষ্টান্ত মনে করিয়ে দিচ্ছেন ইশরাক; সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্ব ছেড়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসে আত্মপ্রকাশ করা নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) হাল ধরেছেন নাহিদ।
“উনি (নাহিদ ইসলাম) চাইলে হয়তো আরও কিছুদিন মন্ত্রিত্ব করে তারপর এনসিপিতে যেতে পারতেন । একটা সময় ছিলো সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহরা জোরালোভাবে দাবি করলে ওনারাও হয়তো মন্ত্রিত্ব নিতে পারতেন। কিন্তু তারা রাজনীতি করবেন বলে সেই কর্মপন্থা বেছে নিয়েছেন। হয়তো একদিন জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে পূর্ণাঙ্গভাবে মন্ত্রীর দায়িত্ব, ক্ষমতা ও সম্মান আবার পাবেন।”
ইশরাক হোসেন বলছেন, দুই উপদেষ্টা পদত্যাগ করলে বর্তমান সরকারের ‘নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি বাড়বে’। সরাসরি রাজনীতিতে যোগ দিয়ে দলীয় ও সাংগঠনিক কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারলে দেশ ও জনগণকে তারা হয়ত ‘আরো ভালো কিছু’ দিতে পারবেন।
“আর ক্ষমতা ধরে রাখলে আপনাদের দলের লোকজনকে বিশেষ সুবিধা দিতেই হবে, এটা থেকে বিরত থাকার বা শতভাগ নিরপেক্ষ থাকার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা অথবা ক্ষমতা আপনাদের নাই। কারোরই থাকে না। কাঁঠাল ভাঙবে আপনাদের মাথায়, খাবে কিন্তু অন্য সবাই।”
ইশরাক হোসেন বলছেন, তাকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে সমর্থকদের আন্দোলনে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, সেজন্য তাকে সমালোচিতও হতে হচ্ছে। কিন্তু তাতে সমর্থন না দিয়ে আর কোনো উপায় তার ছিল না।
“আপনাদেরকে যে ভুল পথে পরিচালিত করা হচ্ছে সেটা জনগণকে বোঝানো দেশের জন্যে প্রয়োজন ছিল। এবং আজ অবধি আমাকে বাঁধা দেওয়ার কাজটি যৌথ সিদ্ধান্তে হচ্ছে, এটা মিনিমাম রাজনৈতিক বোধ সম্পন্ন মানুষ বোঝে। কিন্তু আমি বলবো এটা ছিলো উনাদের ভুল পলিসি, ব্যবহার হলেন আপনি আসিফ ভূঁইয়া।
“আইন আদালত মেনে নিতে না পারলে কোথা থেকে দেশ সংস্কার শুরু হবে? তারপর যত ইচ্ছা সমালোচনা করতেন, দেখতেন আসলে কী করি। এখন পূর্ণাঙ্গ প্রক্রিয়া আমাকে সম্পন্ন করতেই হবে।”
পদত্যাগের এই দাবি থেকে সরার কোনো সুযোগ নেই মন্তব্য তরে বিএনপি নেতা ইশরাক লিখেছেন, “বন্দোবস্ত তো আগেরটাই অনুসরণ হচ্ছে । আরও পাকাপোক্ত করা হচ্ছে বললেও ভুল হবে না। আপনাদের পদত্যাগের দাবি থেকে সরার কোনো সুযোগ নাই । আপনারাই বা কেন থাকতে চাচ্ছেন?”
You might also like

সম্পাদক :মোঃ শাহজালাল
২০২৫ © ব্যানারনিউজবিডি কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
🚧 এই সাইটটি বর্তমানে নির্মাণাধীন 🚧
২০২৫ © ব্যানারনিউজবিডি কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
🚧 এই সাইটটি বর্তমানে নির্মাণাধীন 🚧
You cannot print contents of this website.