সংসদে নারীর ১০০ আসন নিয়ে একমত বিএনপি, পদ্ধতি নিয়ে দ্বিমত

1

সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে ১০০টিতে উন্নীত করার বিষয়ে একমত হয়েছে বিএনপি। তবে সংরক্ষিত আসন বাড়ানো হলেও এটিতে ‘আপাতত’ মনোনয়নের পক্ষে দলটি। বিএনপি মনে করে, নারীর সংরক্ষিত আসনে এখনই নির্বাচনের সময় হয়নি।

- Advertisement -

- Advertisement -

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

বেলা সাড়ে ১১টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল মাল্টিপাস হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়। কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রিয়াজ এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে রাজনৈতিক দলগুলো আলাদা ব্রিফিং করে।

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে নারীর সংরক্ষিত আসন নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন পদ্ধতি আনুপাতিক। এখন আসন আছে ৫০টি। আমাদের দলের পক্ষ থেকে আরও ৫০টি আসন বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রায় সব দলের একই রকম প্রস্তাব ছিল। কিছু কিছু দল বাদে৷ সেই জায়গাতেই ঐক্য কমিশন আছে। তবে এর নির্বাচন পদ্ধতি কী হবে, এ বিষয়ে কোনো ঐক্য এখনও হয়নি। আরও আলোচনার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে।”

বিএনপি সংরক্ষিত নারী আসনে এখনই সরাসরি নির্বাচন চায় না উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন বলেন, “সরাসরি নির্বাচনের জন্য যে পদ্ধতিগুলো…ঘূর্ণায়মান পদ্ধতি অথবা সরাসরি পদ্ধতি যেগুলো আলোচনায় এসেছে, সেটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক বা সংসদীয় সংস্কৃতিতে ভিজিবল বলে আমাদের মনে হয়নি। সেজন্য বলেছি, আরও প্র্যাকটিসের মধ্য দিয়ে হয়তো এক বা দুটি সংসদ চলার মধ্য দিয়ে এটি এমন একটি অবস্থায় যাবে, যাতে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা যাবে।”

দেশের নারী সমাজের এখনও সেরকম অগ্রগতি হয়নি দাবি করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “তাদের (নারীদের) আরও বেশি এগিয়ে নেওয়ার জন্য এই বিশেষ বিধান রাখা উচিত। সমাজ একটা পর্যায়ে পৌঁছালে তখন আর হয়তো বিশেষ বিধানগুলো রাখার প্রয়োজন নাও হতে পারে। এর আগ পর্যন্ত বিশেষ রাখতে হবে।”

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “দুপুরের পরে দুইটি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রথমটি হলো সংসদীয় স্থায়ী কমিটি নিয়ে এবং দ্বিতীয়টি নারী আসনের সংখ্যা এবং সেটির নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে। এর বাইরে যে এজেন্ডাগুলো ছিল, সেটি আজ আলোচনা হয়নি।”

বিএনপির এই নেতা বলেন, “সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে বিরোধী দলীয় সদস্যদের মধ্য থেকে প্রস্তাব উত্থাপন হয়েছিল, সব সভাপতির পদ বিরোধী দলীয় সদস্যদের দেওয়া যায় কি না। এ বিষয়ে প্রথম পর্বের আলোচনায় প্রত্যেকে লিখিত ও মৌখিক জবাব দাখিল করেছিল। কয়েকটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বিরোধী দলীয় সদস্যদের দেওয়ার ব্যাপারে তখনই প্রায় সকল দল একমত হয়েছিল। বিএনপির পক্ষ থেকে আরও কয়েকটি এ জাতীয় সংসদীয় কমিটি দেওয়ার পক্ষে প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে সংসদে জবাবদিহিতা এবং ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা হয়।”

সালাহউদ্দিন বলেন, “কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে বিরোধী দলীয় সদস্যদের মনোনীত করার ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বলে আমার মনে হলো। সেটি এখনও প্রকাশিত হয়নি। তবে কয়টি সংখ্যা ও কী কী মন্ত্রণালয় সেটি এখনই নির্ধারণ হবে না। সেটি জাতীয় সংসদে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে…এবং সাইজ অব দ্য অপজিশন পার্টি, সেটিও ম্যাটার করে। সেই সংখ্যা তখন নির্ধারণ করা যাবে। কারণ, বিরোধী দলের সদস্য সংখ্যা কম হলে এখনই পার্সেন্টেজ নির্ধারণ করা হলে সেটি প্রশ্নের সম্মুখীন হবে।”

এর আগে সকালে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, নিম্নকক্ষে নারী আসনসহ সংস্কার কমিশনগুলোর আরো কিছু সুপারিশ নিয়ে দেশের ৩০টি রাজনৈতিক দলের সাথে দ্বিতীয় দফার বৈঠক শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনা শুরু করেছে সোমবার। সেদিন আলোচনার উদ্বোধন করেন কমিশনের সভাপতি, প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রথম দিন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এলডিপি, এনসিপিসহ দেশের ২৮টি রাজনৈতিক দল ও দুটি জোটের নেতারা অংশ নেন।

You might also like