জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে সরকার: আইন উপদেষ্টা

১২

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য তদন্ত এবং যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

- Advertisement -

- Advertisement -

আইন উপদেষ্টা বুধবার জেনেভায় জাতিসংঘ দপ্তরে ‘বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সংশ্লিষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের ওপর জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদন: ‘এগিয়ে যাওয়ার পথ নির্ধারণ’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনায় এ সব মন্তব্য করেন।

বৃহস্পতিবার (৬মার্চ) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

জেনেভায় চলমান মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৮তম অধিবেশনে মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় এই প্যানেল আলোচনার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত বাংলাদেশের তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনের ওপর উপস্থাপনা করেন।

এ সময় আইন উপদেষ্ট ছাড়াও তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম, বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং ‘মায়ের ডাক’ এর সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলি, নিহত শহিদ মুগ্ধর সহোদর মীর মাহমুদুর রহমান, ফারজানা শারমিন ইমু প্যানেল আলোচনা এবং দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

আইন উপদেষ্টা পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তথ্যানুসন্ধান, প্রতিবেদন প্রস্তুত ও প্রকাশের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারকে ধন্যবাদ জানান।

প্রতিবেদনের ফলাফল এবং এই উদ্দেশ্যে সংগৃহীত ও বিশ্লেষিত প্রমাণগুলো ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে চলমান জবাবদিহি এবং বিচারিক প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

হাইকমিশনার তুর্ক বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় বিগত সরকারের কর্মকর্তা, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বিভাগের সদস্য এবং পূর্ববর্তী ক্ষমতাসীন দলের সাথে সংশ্লিষ্টদের সংঘটিত সহিংসতা পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। এই সময়ে সংঘটিত কিছু অপরাধ মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশে জবাবদিহি, সত্য প্রকাশ এবং ক্ষত নিরাময় নিশ্চিত করার নিমিত্ত মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতা এবং সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্যানেল আলোচনায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত শহিদ মুগ্ধর সহোদর মীর মাহমুদুর রহমান নিহতদের পরিবারের বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।

অন্যদিকে, আহতদের সহায়তায় কাজ করা সুশীল নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ফারজানা শারমিন ইমুও আহতদের গল্প তুলে ধরেন। প্যানেল আলোচনার শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে আইন উপদেষ্টা এবং মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার তুর্কের উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর দেন।

জেনেভাভিত্তিক কূটনীতিক এবং আন্তর্জাতিক সুশীল নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এই প্যানেল আলোচনার একটি উল্লেখযোগ্য দিক ছিল গণঅভ্যুত্থানের সময় যাত্রাবাড়ী এলাকায় সংঘটিত নৃশংসতার ওপর একটি ফরেনসিক ভিডিও প্রদর্শন।

পরে, আইন উপদেষ্টা মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার তুর্কের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠকে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত নৃশংসতা ও অপরাধের জবাবদিহি প্রক্রিয়ায় মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সম্পৃক্তকরণের বিষয়ে আলোচনা হয়।