বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের নতুন কারণ জানাল ভারত

11

বাংলাদেশের বৈদেশিক রপ্তানি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের নতুন কারণ জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল ট্রান্সশিপমেন্ট সংক্রান্ত ইস্যুতে দেওয়া এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আপনাদের আমি মনে করিয়ে দিতে চাই, আমরা এ ঘোষণা (ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল) দেওয়ার আগে বাংলাদেশের থেকে কী কী হয়েছে সেটিও দেখবেন।”
তবে ট্রান্সশিপমেন্ট ইস্যুতে নজর রাখতে বললেও বাংলাদেশ ‘কী করেছে’ বা ‘কী হয়েছে’ এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি এই মুখপাত্র।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ঢাকা সফর করবেন। এ বিষয়টি ভারত কোন চোখে দেখছে তা জানতে চাওয়া হলে মুখপাত্র বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে।’ এর বাইরে তিনি অন্য কোনো মন্তব্য করেননি।
এর আগে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের পর ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার কারণে ভারতের বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দরগুলোতে পণ্যজট সৃষ্টি হচ্ছিল। এই কারণে দেশটির নিজস্ব রপ্তানিতে বিলম্ব, খরচ বৃদ্ধি এবং ব্যাকলগ তৈরি হচ্ছিল। একারণেই এই সুবিধা বাতিল করা হয়।
তবে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেপাল বা ভুটানগামী বাংলাদেশি পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না বলেও নিশ্চিত করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভারত আঞ্চলিক বাণিজ্যের কথা বললেও নেপাল ও ভুটানের মতো দেশে পণ্য পরিবহনে বাধা সৃষ্টি করা নয়াদিল্লির জন্য ঝামেলার।
কারণ এই দুই দেশে পণ্য পরিবহনে বাধা সৃষ্টি হলে বাংলাদেশের সুযোগ ছিল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কাছে অভিযোগ করার। ১৯৯৪ সালে সংস্থাটির জারি করা জেনারেল অ্যাগ্রিমেন্ট অন ট্যারিফস অ্যান্ড ট্রেড (জিএটিটি) এর অনুচ্ছেদ পাঁচ অনুসারে, সব সদস্যকে স্থলবেষ্টিত দেশগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দিতে হবে। এতে কোনো নির্দিষ্ট সীমা দেওয়া যাবে না এবং পরিবহন শুল্কের আওতায় ফেলা যাবে না।
বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদস্য।
তবে ট্রান্সশিপমেন্ট ইস্যুতে এর আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক চীন সফরে দেওয়া কিছু মন্তব্য ভারতের উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা চীনা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে সে সময় বলেছিলেন, “ভারতের উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্য ভূমিবেষ্টিত। আমরা এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক। এটি একটি বিশাল সুযোগের দ্বার উন্মেচিত করেছে। এটি চীনা অর্থনীতির একটি সম্প্রসারণ হয়ে উঠতে পারে।”
এই মন্তব্য ভারতের কূটনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা একে ‘অত্যন্ত আপত্তিকর’ এবং ‘সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। ​
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস লিখেছিল, নয়াদিল্লির সঙ্গে যখন ঢাকার সম্পর্কের অবস্থা ভঙ্গুর-তখন চীনকে নতুন কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চিত্রিত করাও ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে।

- Advertisement -

- Advertisement -

You might also like