কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে চলার পথ বেছে নিচ্ছে ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি বিমান সংস্থা। যদিও তাদের ওপর সরাসরি কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
লুফথানসা, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, সুইস এয়ারলাইন্স, এয়ার ফ্রান্স, ইতালির আইটিএ এবং পোল্যান্ডের লট—গত দুই দিন ধরে পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার না করে বিকল্প পথে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
ফলে ইউরোপ ও ভারতের মধ্যে চলাচলকারী ফ্লাইটগুলোর গড় সময় বেড়েছে প্রায় এক ঘণ্টা। এতে খরচও বাড়ছে, যা শেষ পর্যন্ত যাত্রীদের ওপর চাপতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারত জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণার পর ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় বিমান সংস্থাগুলো পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার না করে বিকল্প পথে ফ্লাইট পরিচালনা করছে
এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারতের বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া পাকিস্তান হয়ে ওড়ার সুযোগ না থাকায় বছরে ৬০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
অন্যদিকে পাকিস্তানের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষও ক্ষতির মুখে পড়ছে। আকাশসীমা ব্যবহারের জন্য যে ফি নেওয়া হতো, তাতে বছরে শত শত মিলিয়ন ডলার রাজস্ব হারাতে পারে তারা।
২০১৯ সালে বালাকোটে ভারতীয় বিমান হামলার পর পাঁচ মাসের নিষেধাজ্ঞায় পাকিস্তানের কমপক্ষে ১০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয় বলে তখন জানানো হয়েছিল।
সম্প্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে একটি সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ভারতীয় নাগরিক।
ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনকে দায়ী করে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে। এর জবাবে পাকিস্তান ভারতীয় বিমানের জন্য তার আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। ভারতও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানি উড়োজাহাজের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে আকাশপথে চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং উভয় দেশের বিমান সংস্থাগুলো বাড়তি খরচের মুখে পড়ে।
এশিয়া-প্যাসিফিক অ্যাভিয়েশন সেন্টার (সিএপিএ) জানিয়েছে, পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ থাকায় ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর বাড়তি খরচ হচ্ছে মাসে ৭০ থেকে ৮০ মিলিয়ন ডলার।
বৃহস্পতিবার ভারতের এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো ও স্পাইসজেট—সিভিল অ্যাভিয়েশন মন্ত্রণালয়ে পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ থাকার প্রভাব নিয়ে মতামত ও পরামর্শ জমা দিয়েছে বলে পিটিআইয়ের খবরে জানানো হয়েছে।