মুর্শিদাবাদের সহিংসতা: প্রেস সচিবের মন্তব্যকে ‘অযাচিত’ বলল ভারত

21

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে হওয়া সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলমের মন্তব্যকে ‘অযাচিত’ বলছে ভারত। দেশটির মতে, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের কাছে ‘ভালো সাজা’র চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এর বদলে ভারত পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ যেন নিজের দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে মনোযোগ দেয়।

- Advertisement -

- Advertisement -

নতুন ওয়াকফ আইন নিয়ে আন্দোলন নিয়ে গত সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় অন্তত তিনজন নিহত হন। ভারতের রাজনীতিকরা দাবি করছেন, মুর্শিদাবাদে সহিংসতায় বাংলাদেশের উসকানি রয়েছে।

বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “আমরা ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর সম্পূর্ণ সুরক্ষার জন্য সকল পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”

এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “এই মন্তব্য ভারতের উদ্বেগের সঙ্গে তুলনা টানতে এক ধরনের অসৎ ও প্রচ্ছন্ন চেষ্টা। অথচ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান নিপীড়নের ঘটনায় অপরাধীরা এখনও অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে।”

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মার্চে দেশটির পার্লামেন্টে বলেন, “রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হওয়ার পর ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে দুই হাজার ৪০০টি নৃশংসতার ঘটনা ঘটেছে। ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত এই সংখ্যা-৭২।”

এনডিটিভি লিখেছে, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সহিংসতার কবলে পড়া মুর্শিদাবাদে সফরের ঘোষণার সময় ভারতের এই প্রতিক্রিয়া এলো।

এদিকে পরিস্থিতি ‘ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে’ দাবি করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় রাজ্যপালকে তার সফর স্থগিত করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের প্রতিবেদনের বরাতে এনডিটিভি লিখেছে, “মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের থানা এলাকায় ৪ এপ্রিল শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ শুরু হয়। তবে ৮ এপ্রিল উমরপুরে পাঁচ হাজার জনতা মহাসড়ক অবরোধ করলে তা সহিংস হয়ে ওঠে। পুলিশের ওপর ইট, লোহার রড, ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়। নিশানা করা হয় সরকারি গাড়িকেও।”

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “১১ এপ্রিল সুতি ও সমশেরগঞ্জে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করা হয়। পুলিশের ভাষ্য, কর্মকর্তা ও সাধারণ নাগরিক- উভয়কেই রক্ষা করতেই সুতির সাজুর মোড়ে গুলি চালিয়েছিল পুলিশ।”

মুর্শিদাবাদ জেলাজুড়ে সহিংসতার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ২৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

You might also like