ভারতের বাঁধে পানিশূন্য পাকিস্তানের চেনাব নদী

18

পাকিস্তানে বহমান চেনাব নদীর পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। মঙ্গলবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।

- Advertisement -

- Advertisement -

ইসলামাবাদ জানিয়েছে, রবিবার যেখানে চেনাব নদীতে প্রবাহিত হতো ৩৫ হাজার কিউসেক পানি, সেখানে সোমবার সকালে তা ৩ হাজার ১০০ কিউসেক হয়ে যায়।

দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশের সেচ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডনকে বলেন, “ভারত আমাদের পানি ব্যবহার করে তাদের বাঁধ/জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো পূর্ণ করছে। এটি সিন্ধু পানি বন্টন চুক্তির গুরুতর লঙ্ঘন।”

ভারতের চেনাব বেসিনে তিনটি প্রধান জলবিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে। সেগুলো হলো- ১ হাজার মেগাওয়াটের প্যাকাল ডুল, ৯০০ মেগাওয়াটের বাগলি হার ও ৬৯০ মেগাওয়াটের সালাল।

নয়াদিল্লি এই বাঁধগুলো পূর্ণ করার জন্য চেনাব নদীর পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করছে। যার ফলে পাকিস্তান অংশে পানি চুক্তি অনুযায়ী স্বাভাবিকের তুলনায় ৯০ শতাংশ কমে গেছে।

ভারত শুধু পানি কমিয়েই থেমে থাকেনি। বিশেষজ্ঞদের বরাতে ডন জানিয়েছে, দেশটির সালাল ও বাগলি হার প্রকল্পের বাঁধে ‘রিজার্ভয়ার ফ্লাশিং’ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। যার ফলে পানি পলি যুক্ত হয়ে পাকিস্তানে প্রবাহিত হচ্ছে।

এই প্রক্রিয়া সিন্ধু পানি বন্টন চুক্তির অধীনে নিষিদ্ধ ছিল। তবে চুক্তি স্থগিতের পর ভারত এখন এই পদক্ষেপও নিয়েছে।

চেনাব নদীর পানি প্রবাহের কমিয়ে দেওয়া- পাকিস্তানে চলতি মৌসুমে ফসল উৎপাদনে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। দেশটি এরই মধ্যে পানির ঘাটতিতে রয়েছে। ভারতের এমন পদক্ষেপ সংকট আরও বাড়াবে।

ইসলামাবাদ দাবি করেছে, ভারতের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তির লঙ্ঘন- যা দক্ষিণ এশিয়ার জলবায়ু নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।

গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

নয়াদিল্লি এই হামলার সঙ্গে ইসলামাবাদ যুক্ত বলে দাবি করেছে এবং একাধিক কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে সিন্ধু পানি বন্টন চুক্তি স্থগিত করাও রয়েছে।

তবে পাকিস্তান এতে যুক্ত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ঘটনার আন্তর্জাতিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছে। একই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, পানি বন্টন চুক্তি স্থগিত করা পাকিস্তানের জন্য রেডলাইন (শেষ সীমা)। দেশটির দায়িত্বশীল অনেকে পরমাণু বোমা হামলা চালানোর হুমকিও দিয়েছেন।

আপাতত ভারতের সিন্ধু পানি বন্টন চুক্তি স্থগিতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান। তারা বিশ্ব ব্যাংক, স্থায়ী সালিসি আদালত, আন্তর্জাতিক আদালত ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে এই বিষয়টি উত্থাপন করার পরিকল্পনা করছে।

You might also like