চীনা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ২৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ, পাল্টা হুঁশিয়ারি চীনের

29

চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন উত্তেজনা। যদিও হোয়াইট হাউস বলছে, এটি বাস্তবে নতুন কোনো শুল্ক নয়—বরং পূর্ববর্তী ও সাম্প্রতিক শুল্কের সম্মিলিত হিসাব, তবুও চীন বিষয়টিকে দেখছে এক ধরনের অর্থনৈতিক চাপ ও রাজনৈতিক সংকেত হিসেবে।

- Advertisement -

- Advertisement -

হোয়াইট হাউসের ভাষ্য অনুযায়ী, এই ২৪৫ শতাংশ কোনো একক নীতির ফল নয়, বরং বিগত দুই প্রশাসনের সময়কালে ধারাবাহিকভাবে আরোপিত নানা ধরনের কর, জরিমানা ও প্রতিক্রিয়ামূলক শুল্কের সম্মিলিত ফল। ইলেকট্রিক গাড়ি ও চিকিৎসা পণ্য, বিশেষ করে ইনজেকশন সিরিঞ্জের মতো কিছু পণ্যে অতীতে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। চলতি বছর ট্রাম্প প্রশাসন অতিরিক্তভাবে নতুন করে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে এবং এর সঙ্গে যুক্ত হয় ফেন্টানিল-সংক্রান্ত চীনা উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে ২০ শতাংশ আলাদা কর। এসব মিলে হিসাব দাঁড়িয়েছে সর্বোচ্চ ২৪৫ শতাংশে।

চীন এই হিসাবকে ‘সংখ্যার খেলা’ বলে অভিহিত করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেছেন, এমন পরিসংখ্যান তাদের কাছে তেমন গুরুত্ব বহন করে না। বরং চীন এ ধরনের চাপের রাজনীতিকে মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র চীনের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে এমন সিদ্ধান্তে অনড় থাকে, তবে তারা এর সমুচিত জবাব দেবে।

এই উত্তেজনার মধ্যে চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বা ডব্লিউটিও-তে একটি নতুন অভিযোগ দাখিল করেছে। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন অজুহাতে একতরফাভাবে শুল্ক আরোপ করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যনীতির চরম লঙ্ঘন করছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য বলেছেন, আলোচনার বল এখন চীনের কোর্টে। তিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের চীনের সঙ্গে চুক্তি করতে কোনো তাড়া নেই, বরং চীনেরই প্রয়োজন এখন সমঝোতা করে উত্তেজনা প্রশমনের। এর মধ্যেই হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট নিজে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ও অর্থনীতিবিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং একাধিক দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তির কথাবার্তাও চলছে।

বাণিজ্যনীতিতে এমন অবস্থানের মধ্যেই চীন নতুন করে তাদের বাণিজ্য আলোচক পরিবর্তন করেছে। বিশ্বের বাণিজ্য সংস্থায় দেশটির স্থায়ী প্রতিনিধি লি চেংগাংকে বাণিজ্য আলোচনার দায়িত্বে আনা হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিবর্তন কেবল একজন প্রতিনিধি নয়, বরং চীনের আলোচনার ধরনে নতুন কৌশল আনার প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বিশ্ব অর্থনীতি বর্তমানে যে টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তাতে করে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের এমন উত্তেজনা শুধু দ্বিপক্ষীয় নয়, বরং বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থা, মুদ্রানীতি ও বিনিয়োগ পরিবেশে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।

You might also like